Ad0111

নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের ভিসা কার্ড নিয়ে জটিলতায় ব্যাংকগুলো

নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এসব ব্যক্তির ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্যবহার নিয়ে জটিলতায় পড়েছে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের ভিসা কার্ড নিয়ে জটিলতায় ব্যাংকগুলো
নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের ভিসা কার্ড নিয়ে জটিলতায় ব্যাংকগুলো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্প্রতি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান ৬ কর্মকর্তার ওপর মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এসব ব্যক্তির ভিসা ও মাস্টারকার্ড ব্যবহার নিয়ে জটিলতায় পড়েছে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা অনুযায়ী এসব ব্যক্তি মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন না। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে যে ভিসা এবং মাস্টারকার্ড ব্যবহার করা হয় এগুলোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। তাই উল্লেখিত ব্যক্তিরা এসব কার্ড-সেবা গ্রহণ করতে পারবেন কিনা বা তাদের এই সেবা দেয়া অব্যাহত থাকলে ব্যাংকগুলো কোনো জটিলতায় পড়বে কি-না এ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সুরাহা করতে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। গতকাল এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। ডিসেম্বর ক্লোজিং হওয়ায় পরবর্তীতে বৈঠক হতে পারে।


সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকগুলো এখন নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্তদের নামে কোনো কার্ড ইস্যু করা হয়েছে কি-না, সেটিও খতিয়ে দেখা শুরু করেছে। এছাড়া স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অনুসৃত নীতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ভিসা-মাস্টারকার্ড কর্তৃপক্ষ, সরকার বা মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে কোনো কিছু অবহিত করা হয়নি।


সূত্র জানায়, মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশের ৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো ধরনের আর্থিক পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন না। এমনকি দেশে বা বিদেশে কোথাও ব্যাংক খাতের ভিসা, মাস্টারকার্ড বা আমেরিকান এক্সপ্রেসের (অ্যামেক্স) মতো মার্কিন কার্ড পরিষেবা ব্যবহারেরও আর কোনো সুযোগ থাকছে না তাদের। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানায়, এ নিষেধাজ্ঞায় উল্লিখিত বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশ ইও.১৩৮১৮-এর আওতাভুক্ত করা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জারিকৃত ওই আদেশের আওতাভুক্তদের বিশ্বব্যাপী মার্কিন আর্থিক নেটওয়ার্ক থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করার কথা বলা হয়েছে। সেই হিসাবে বিশ্বের কোথাও ভিসা, মাস্টারকার্ড, অ্যামেক্সসহ মার্কিন আর্থিক নেটওয়ার্কের অধীন কোনো কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন না উল্লিখিত ৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ কোনো দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে সেখানকার মার্কিন আর্থিক সেবাগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। মাস্টার কার্ড কোনো ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসা করে না। আমাদের কার্ডগুলো ইস্যু করে ব্যাংক। নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন ব্যক্তিদের সঙ্গে কার্ডসংশ্লিষ্ট কোনো ব্যাংক ব্যবসা করবে কিনা, সেটি তারাই নির্ধারণ করবে।


জানা গেছে, ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ড ইস্যুর মাধ্যমে সারা বিশ্বের আর্থিক পরিষেবার উল্লেখযোগ্য অংশ দখলে রেখেছে ভিসা, মাস্টারকার্ড ও অ্যামেক্স। বাংলাদেশেও ব্যাংক খাতের ইস্যুকৃত কার্ডগুলোর প্রায় ৯৮ শতাংশই মার্কিন এসব পরিষেবাভিত্তিক। দেশের সবচেয়ে বেশি ক্রেডিট কার্ড রয়েছে বেসরকারি খাতের দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডের। গ্রাহকদের জন্য আমেরিকান এক্সপ্রেসের (এমএক্স) কার্ড ইস্যু করছে ব্যাংকটি।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এবং এ-সংক্রান্ত করণীয় নিয়ে আলোচনার জন্য ব্যাংকগুলোর প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তাদের (ক্যামেলকো) গতকালই বৈঠক করার কথা ছিল। এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে জানানো হবে। আমাদের কার্ডহোল্ডারদের মধ্যে কেউ আছেন কিনা, সেটি দেখা হচ্ছে। 

নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের ১০ই ডিসেম্বর জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে নিজ নামে কিংবা সেখানকার স্থানীয় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় কোনো সম্পত্তি থাকলে তা জব্দ হবে। বিষয়টি অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোলকে (ওএফএসি) অবহিত করতে হবে। এছাড়া ওএফএসির বিশেষ অনুমতি বা অন্য কোনো ছাড় না থাকলে মার্কিন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিষেধাজ্ঞার আওতাধীনদের সঙ্গে লেনদেনও করতে পারবে না। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। এ নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়া অন্যরা হলেন র‌্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) মো. আনোয়ার লতিফ খান। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক এক ঘোষণায় বেনজীর আহমেদ ও র‌্যাব-৭-এর সাবেক অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দীন আহমেদের ওপর সে দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। 

সূত্র : মানবজমিন

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news