নির্বাচনে না এলে জনগণ বিএনপির কবর রচনা করবে : নানক
প্রথম নিউজ, ঢাকা : ষড়যন্ত্র পরিহার করে বিএনপি নির্বাচনের পথে না এলে জনগণ বিএনপির কবর রচনা করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ এ আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে নানক বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আপনাদেরকে বলতে চাই— আপনাদের ভুল পথ ত্যাগ করতে হবে। ভুল পথ যদি ত্যাগ করে সঠিক পথে, গণতন্ত্রের পথে ও নির্বাচনের পথে না আসেন, তাহলে বাংলার জনগণ দেশের মাটিতে আপনাদের কবর রচনা করবে।
তিনি বলেন, তারা এখন দিনক্ষণ দেয় শেখ হাসিনাকে উৎখাত করবে। কি কারণে উৎখাত করবেন? মির্জা ফখরুল সাহেব ক্ষমতায় থাকতে কী করেছেন বাংলাদেশের জন্য? ক্ষমতায় থাকতে রক্তে প্লাবিত করেছেন বাংলাদেশকে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন। কুলাঙ্গার তারেক রহমান ওই বিএনপি-জামায়াত সরকারের পাশে আরেকটি হাওয়া ভবন সরকার গঠন করেছিল। লুটপাট-সন্ত্রাসের হেডকোয়ার্টার সৃষ্টি করেছিল। সেই জায়গা থেকে হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠন করার সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নেমে আসা অকথ্য নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। বলেন, আপনারা মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন। ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ করেছেন। আমাদের হাত কেটেছেন, পা কেটেছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থন করার অপরাধে আমাদের চোখ উপড়ে ফেলেছেন। যারা আওয়ামী লীগ সমর্থন করে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছেন। সেই বিএনপি এখন বলে আইনের শাসনের কথা। সেই বিএনপি এখন শোনায় মানবাধিকারের কথা! সেই বিএনপি এখন বলে গণতন্ত্রের কথা!
মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, সরকার উৎখাত করার ষড়যন্ত্র তো শুরু করেছিলেন ২০০৯ সাল থেকে? কিন্তু পারেননি। কারণ বাংলার জনগণের জন্য শেখ হাসিনা কাজ করেছেন। শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করেছেন। শেখ হাসিনা উড়াল সেতু করেছেন। শেখ হাসিনা মেট্রোরেল করেছেন। শেখ হাসিনা বছরের প্রথম মানুষের শিশুদের হাতে হাতে বিনা পয়সায় বই পৌঁছে দেন। শেখ হাসিনা কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মাছ উৎপাদনে সার্বিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি।
শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে নানক বলেন, তোমাদের এই সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের সংগঠন। তার গড়া সংগঠন। এই সংগঠনের পতাকাতলে সমবেত হয়ে সাচ্চা দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে উঠবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ ধরে তোমরা আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসবে। তবেই শেখ রাসেলের আত্মা শান্তি পাবে।
ফজিলাতুন নেছা মুজিবের আদর্শে অনুপ্রাণিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আগামী দিনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তোমরাই হবে আগামী দিনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কারিগর।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নতুন স্বপ্ন উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। তাই আমাদের সুসংগঠিত হতে হবে। আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে. এম শহিদ উল্যা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও সাংগঠনিক সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতনসহ অনেকে।