Ad0111

সরকার নাৎসীবাদ ও ফ্যাসিবাদের দূষিত মিশ্রণ : রিজভী

এক যুগের বেশী সময় ধরে এই আওয়ামী দস্যুরা ওয়ান-ইলেভেনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এদেশের মানুষের কাঙ্খিত গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ফ্যাসীবাদী শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।

সরকার নাৎসীবাদ ও ফ্যাসিবাদের দূষিত মিশ্রণ : রিজভী
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: আওয়ামী শাসনের ছত্রে ছত্রে শুধু পৈশাচিকতা ও বিভীষিকার উপস্থিতি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘এরা (আওয়ামী লীগ) গুমের কর্মসূচির বৃত্তের মধ্যে ভয়ঙ্কর নাৎসীবাদী পন্থায় অপশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এদের অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ থেকে বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা। এরা নাৎসীবাদ ও ফ্যাসিবাদের এক দূষিত মিশ্রণ।

আজ বৃহস্পতিবার  নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দুইদিন আগে ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অভিশপ্ত ভয়ংকর কালো দিবসের পনের বছরপূর্তি। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারী অসাংবিধানিক তথাকথিত এক সরকার ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশের সমস্ত কিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল। গণতন্ত্র হত্যা, মানুষের অধিকার হরণ করে দেশকে নিক্ষেপ করেছিল একটা অন্ধকার গহ্বরে। দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তিকে নির্মূল করার জন্য দীর্ঘ দিনের দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন গং এর তথাকথিত অবৈধ সরকার। বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণের লক্ষ্যে সংবিধানসম্মত তত্তাবধায়ক সরকারকে উৎখাত করে বেআইনী সেনা সমর্থিত সরকার গঠন করা হয়। গণতন্ত্রের চিরকালীন পথরেখায় চলমান নন্দিত একজন নেত্রী ও দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, দেশনায়ক তারেক রহমানসহ বহুসংখ্যক রাজনৈতিক নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করা হয়। এক-এগারোর যে তান্ডব, বিরাজনীতিকরণের যে তান্ডব তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছেন জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ তার পরিবার। তাদের মূল লক্ষ্য ছিলো দেশপ্রেমিক জাতীয়তাবাদী শক্তিকে র্নিমূল করা। দুই বছর দেশকে ছিন্নভিন্ন করে ১/১১ এর বেআইনী সরকার পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙ্গে দিয়ে একটি পাতানো ভূয়া নির্বাচনের মাধ্যমে তাদেরই বশংবদ আরেক দুর্বৃত্ত লুটেরা গোষ্ঠী-আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে গেছে। ‘ওয়ান ইলেভেন’ ষড়যন্ত্রের সরাসরি বেনিফিশিয়ারি বর্তমানের নিশিরাতের সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা স্পষ্ট করেই বলেছেন, কথিত ‘ওয়ান ইলেভেন’ তাদের আন্দোলনের ফসল। তবে সময়ের পরিক্রমায় জনগণের কাছে আজ এটি স্পষ্ট যে, কথিত ‘ওয়ান ইলেভেন’ ছিল মূলতঃ বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার একটি সুগভীর চক্রান্ত। আর এই চক্রান্তে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন ওয়ান ইলেভেনের প্রধান বেনিফিশিয়ারি শেখ হাসিনা। আমরা সবাই জানি যে, তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে সম্পূর্ণভাবে দলবিহীন, ভোটারবিহীন বিনা ভোটের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখলে রাখে। অতঃপর ২০১৮ সালে বিশ্বে ভোট ডাকাতির অভিনব ইতিহাস রচনা করে এই অপশক্তিটি। রাতের অন্ধকারে ভোটের বাক্স ভরে ‘নিশিরাতের ভোট ডাকাত’ হিসাবে সারা পৃথিবীতে নিজেদের কলংকিত পরিচিতি তৈরী করেছে।

তিনি বলেন, গত এক যুগের বেশী সময় ধরে এই আওয়ামী দস্যুরা ওয়ান-ইলেভেনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এদেশের মানুষের কাঙ্খিত গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় ফ্যাসীবাদী শাসন জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করেছে। গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। বিনা নির্বাচনে পার্লামেন্ট, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। মানবাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত করেছে। দেশকে গুম, খুন, অপহরণ, বন্দুকযুদ্ধ,অবিচার, অনাচার, লুটপাট, টাকাপাচার, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অন্ধকার রাজত্বে ডুবিয়ে রেখেছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, বাস্তবে তথাকথিত ওয়ান ইলেভেনের পর পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ, জনগণ হারিয়েছে বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার। কথিত ওয়ান ইলেভেনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনসহ গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে রক্ত ঢেলে দেয়া আজকের যে বাংলাদেশ এই বাংলাদেশ মানুষ কখনো চায়নি। একজন মাত্র ব্যক্তির অবৈধ ক্ষমতার খায়েশ মেটাতে গিয়ে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে জনগণের ওপর। এই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ চক্র গণতন্ত্রকামী মানুষকে গুম, খুন, অপহরণ করতে গিয়ে দেশের জন্য কলংক বয়ে এনেছে। দেশের অর্থনীতি হুমকীর মুখে পড়েছে। দেশটাকে নিয়ে আজ ভাগ বাটেয়ারার হাট বসেছে। আজ সারা বিশ্ব থেকে নিষেধাজ্ঞা আসছে, এর মানে কী ? বিশ্বের একশটির বেশি দেশ মনে করে বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। ক্ষমতা দখল করে মানুষকে শোষণ করে নাম দিয়েছে রোল মডেল। কোন দেশ এই রোল মডেলের কথা বলেছে, অনুসরণ করেছে, তা জনগণ জানতে চায়। আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ এই অনির্বাচিত স্বৈরাচার সরকারের প্রতি অতিষ্ঠ ও বিক্ষুব্ধ। এই সরকারের হাত থেকে জনগন মুক্তি চায়। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। একাত্তরের মত বর্তমানে আওয়ামী হানাদারদের হাত থেকে পরিত্রান পেতে সারাদেশের মানুষ আজ মুক্তি পাগল হয়ে উঠেছে। আমাদের সভা সমাবেশগুলোকে মানুষের উর্মিমুখর ঢল নামছে। ১৪৪ ভেঙ্গে জনস্রোত নেমে আসছে রাজপথে। জনগনের এখন সংশপ্তক অঙ্গীকার-জীবন দিয়ে হলেও এ মাফিয়াদের হটিয়ে দেশের মানুষকে মুক্ত করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী শাসনের ছত্রে ছত্রে শুধু পৈশাচিকতা ও বিভিষিকার উপস্থিতি। এরা গুমের কর্মসূচির বৃত্তের মধ্যে ভয়ংকর নাৎসীবাদী পন্থায় অপশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এদের অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ থেকে বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা। এরা নাৎসীবাদ ও ফ্যাসিবাদের এক দু:ষিত মিশ্রণ।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যডভোকেট আবেদ রেজা প্রমুখ। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news