গুম পরিবারের কাছ থেকে মিথ্যা বিবৃতিতে সই করিয়ে সরকার বিশ্ববিবেককে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত করছে: রিজভী
এখন যে পরিবারগুলোর গুম হয়েছে তাদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন, নিজেরা স্টেটমেন্ট লেখেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্টেটমেন্ট লেখেছেন–বলছে যে, এখানে সই করো|
প্রথম নিউজ, ঢাকা: গুম পরিবারের কাছ থেকে ‘মিথ্যা বিবৃতিতে সই করিয়ে সরকার বিশ্ববিবেককে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ রোববার দুপুরে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই অভিযোগ করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইউনির্ভাসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ইউটাব) এর উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক তাজমেরী এসএ ইসলামের মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। এতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। ২০১৮ সালেল ২৩ সেপ্টেম্বর মারপিটসহ দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় উত্তরা পশ্চিম থানার এক মামলায় বৃহস্পতিবার তাজমেরী এসএ ইসলামকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন যে পরিবারগুলোর গুম হয়েছে তাদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠাচ্ছেন, নিজেরা স্টেটমেন্ট লেখেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্টেটমেন্ট লেখেছেন–বলছে যে, এখানে সই করো? এটা কী? বলা হচ্ছে যে, আমার ছেলে বা আমার স্বামী সে নিজে নিজেই হারিয়ে গেছে। পুলিশ লিখে নিয়ে যাচ্ছে আর ওখানে(স্টেটমেন্টে) সই করতে বলছে পরিবারকে। পুলিশের হুমকির মুখে ক‘জন টিকবে? অনেকে প্রতিবাদ করেছে যে, না আমরা জানি, কিভাবে তাদেরকে গুম করা হয়েছে। এখন এই ধরনের একটি প্রচেষ্টা সরকার নিয়েছেন যাতে বিশ্বকে দেখানো যায় যাতে যারা গুম হয়েছে তারা নিজে নিজে হারিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আসলে তো কোনো কিছু আটকিয়ে রাখা যায় না। আটকিয়ে রাখায় যায় না বলেই বিএনপি ব্যস্ত থাক তাজমেরী এস এ ইসলামকে নিয়ে, বিএনপি ব্যস্ত থাক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে।আর ফাঁক দিয়ে আমরা(সরকার) এই কাজগুলো করি। কারণ চারিদিকে আজকে ধিক্কার উঠেছে, চারিদিকে আজকে সমালোচনা ঝড় বইছে। কিন্তু কোনো লাভ হবে না। পতন যখন অত্যাসন্ন হয় সেই পতনকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। আপনি যত বাঁশ দিয়ে, কাঠ দিয়ে, লোহার রড দিয়ে আপনার সিংহাসনকে ঠেক দেয়ার চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। আপনার সিংহাসন আর শক্ত থাকবে না। ওটা এখন টলবল করা শুরু হয়েছে, তার লাস্ট প্যরেগটা আপনি নিজেই মেরেছেন আপনার কফিনে, আপনার সরকারের কফিনে তাজমেরী ইসলামের মতো একজন শিক্ষাবিদকে কারাগারে পাঠিয়ে।”
সরকারের পতন অসম্ভাবী উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, ফয়সালা হবে রাজপথে। এই ফয়সালা গণতন্ত্রের ফয়াসালা, এই ফয়সালা গণতন্ত্রের জয়যাত্রার ফয়সালা, এই জয়যাত্রা অত্যাসন্ন। আপনার ফ্যাসিবাদী, আপনার নাতসীবাদের দুষিত মিশ্রন বাংলাদেশ থেকে আপনার সরকার নিঃশেষ হয়ে যাবেন। রিজভী বলেন, এই প্রতিবাদী মানববন্ধন থেকে আমি তার এই মুহুর্তে মুক্তি দাবি করছি। তাকে মুক্তি দিন।অন্যথায় এইটাই অগ্নি স্ফুলিঙ্গের মতো আন্দোলনের এমন দাবানল তৈরি হবে সেই দাবানলে প্রধানমন্ত্রী আপনার র্যাব, আপনার পুলিশ, আপনাকে যারা পাহারা দেয়। কেউ আর আপনাকে পাহারা দেবে না। আপনার পতন অবিসম্ভাবী হবেই।
ইউটাবের প্রেসিডেন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেটে শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, কামরুল আহসান, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আনিসুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যপক মতিনুর রহমান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমজাদ হোসেন, জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুস, মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ডক্টরস অ্যসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, সদস্য সচিব আমানউল্লাহ আমান প্রমূখ ।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: