গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা করেছে সরকার: খসরু 

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

গাজীপুরে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা করেছে সরকার: খসরু 

প্রথম নিউজ, ঢাকা: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার চেষ্টা করেছে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর জন্য এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

তিনি বলেন, গাজীপুরের যে নির্বাচন হয়ে গেল এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। কিন্তু এ নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলা হচ্ছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেখাতে হবে চেষ্টা করেছে। সেই চেষ্টার ফলাফল আমরা দেখে ফেলেছি। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের আসল চিত্র।

শুক্রবার (২৬ মে) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

আমির খসরু বলেন, দলবাজদের প্রভাব এত বেশি হয়ে গেছে যে বাংলাদেশে সাধারণ যারা সাংবাদিক রয়েছে, যারা প্রফেশনালি সাংবাদিক রয়েছে, যারা সাংবাদিকতার পেশা হিসেবে নিতে চায় তাদের স্পেস সীমিত হয়ে গেছে। দলবাজরা নির্লজ্জভাবে তৈল মর্দন করতে করতে সাংবাদিকদের বদনাম হচ্ছে। কিছু সাংবাদিকদের জন্য সমস্ত সাংবাদিকদের কলঙ্ক বহন করতে হচ্ছে। 

তিনি বলেন, যারা সাংবাদিকতা করতে আসছেন কতটুকু সাংবাদিকতা করতে পারছেন সেটা আপনাদের থেকে কেউ ভালো জানে না। আজকে সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ বিদেশে অবস্থান করছে তারা বাংলাদেশে থাকতে পারছে না। তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে। আজকের দুবাই লন্ডন আমেরিকা যেখানেই যান না কেন সাংবাদিকদের দেখা যায়। আবার অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। সুতরাং সাংবাদিকদের যে মানদণ্ড এটা যদি ফিরিয়ে আনতে চায় তাহলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সম্মান ফিরিয়ে না আনলে আপনারা স্বাধীন সাংবাদিকতার যে বিশ্ব মানদণ্ড সেখানে পৌঁছাতে পারবেন না। যার যার অবস্থান থেকে সকলকে কাজ করতে হবে।

খসরু বলেন, সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সাংবাদিকদের অবদান ছাড়া গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কোনটাই অর্জন করা সম্ভব নয়। 

"রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সাংবাদিকরা হাতে হাত মিলিয়ে চলার কথা সেখানে যদি একটি পক্ষ আলাদা হয়ে যায় তাহলে স্বাভাবিক রাজনৈতিক এবং সাংবাদিকদের যে একটি পরিবেশ থাকার কথা স্বাভাবিকভাবে সেটি থাকবে না বাংলাদেশে। সেটাই আজকে হচ্ছে।"

তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটির মাধ্যমে সাংবাদিকরা কিভাবে নির্যাতিত হচ্ছে এবং সেন্সরশীপ চালু হচ্ছে। দেশের মানুষের আশা ভরসা তুলে ধরেন সাংবাদিকরা। কিন্তু তারা আজকে কোন সুযোগ পাচ্ছে না। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং গণতান্ত্রিক অর্ডার ব্যতীত যেসকল ব্যক্তিরা যারা নির্বাচনী আলোচনায় আনতে চাচ্ছে নির্বাচনকে তারা এই সরকারের পক্ষে কাজ করছে। এই ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারের পক্ষে কাজ করছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। তারপরে নির্বাচনের আলোচনা আসবে। অবশ্যই অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যতীত এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

এসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণমাধ্যমের যতটুকু স্বাধীনতা আছে তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে দমন করছে সরকার। সাগর রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে এমন কিছু আছে যা প্রকাশ করতে সরকার ভয় পায়।

সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, আবুল কালাম আজাদ, ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপু, সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসানসহ রিপোর্টাস ইউনিটির সদস্যবৃন্দ।