যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ‘বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিরই প্রতিধ্বনি: মির্জা ফখরুল

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েব সাইটে ‘পরিবর্তিত ভিসা নীতি’ প্রকাশের পর শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ‘বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিরই প্রতিধ্বনি: মির্জা ফখরুল

প্রথম নিউজ, ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ‘বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিরই প্রতিধ্বনি’ উল্লেখ করে ‘সরকার পদত্যাগ’ এর দাবি পূনর্ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েব সাইটে ‘পরিবর্তিত ভিসা নীতি’ প্রকাশের পর শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজন করার সকল প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য এবং একই সাথে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, জনগণের শান্তিপূর্ন সমাবেশ করার স্বাধীনতা ও অধিকার চর্চাকে সহিংসভাবে দমনের যে কোনো নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে অবস্থান নিয়েছে তা বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিরই সুস্পষ্ট প্রতিধ্বনি।”
‘‘ বিএনপি মনে করে, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় জনগণ দীর্ঘদিন যাবত যে দাবি জানিয়ে আসছিল পরিবর্তিত মার্কিন এই ভিসা নীতিতে তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে।”
সরকারের প্রতি আহ্বান রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা আবারও দাবি করছি, এই অনির্বাচিত ফ্যাসিবাদী সরকার দেশে এবং বিদেশে তার প্রত্যাখাত অবস্থাকে অনুধাবন করে অবিলম্বে পদত্যাগ করবে এবং ভোটারবিহীন জাতীয় সংসদ বাতিল ঘোষণা করবে। ‘‘ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠূ নির্বাচনের ব্যবস্থা করাই দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সকল মহলের দাবি ও প্রত্যাশা।চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক তথা জাতীয় সংকট থেকে মুক্তিলাভের এটাই একমাত্র পথ।”
এই দাবি আদায়ে লাগাতারভাবে সমর্থন দেবার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই দাবি আদায়ে অনড় ও অবিচল থাকার জন্য আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব। বুধবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদের এই পদক্ষেপ। বিবৃতিতে ব্লিংকেন বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে যারা এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে সমর্থন দিতে এই নীতি ঘোষণা করেছেন তিনি।

তার ভাষ্যে,এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপে সক্ষম হবে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৩ মে থেকে স্কয়ার হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিতসা নিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে দলের সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর স্বাক্ষরে এই বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ বিএনপি বিশ্বাস করে, বর্তমান ফ্যাসিবাদি সরকারের অধীনে কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। কেবলমাত্র একটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের অধিনেই তা সম্ভব। আর সে কারণেই বিএনপি দেশের সকল গণতান্ত্রিক দল ও শক্তিকে সাথে নিয়ে  নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার  সরকার আদায়ের লক্ষ্যে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসুচি পালন করে চলছে।”
‘‘ আমরা অত্যন্ত গভীরভাবে লক্ষ্য করছি যে, এই পরিবর্তিত মার্কিন ভিসা নীতিতে শুধুমাত্র পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেই আওতাভুক্ত করা হয়নি, সুনির্দিষ্টভাবে বিচারবিভাগ, প্রশাসন, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সরকারি জনবল, সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা এবং  রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ যে বা যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ব্যাহত করতে চেষ্টা করবে তাদের এবং তাদের পরিবারবর্গকে আওতাভুক্ত  করা হয়েছে।”