খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে: মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে রয়েছেন বলে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন তাঁকে মুক্তি না দিয়ে রাজপথে ফয়সালা হবে।
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ একদফা দাবিতে রাজধানীর ধোলাইখালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সোমবার দুপুর পৌনে তিনটায় কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সভা হয়। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন। ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে যায় পুরো এলাকা।
এক আমেরিকার ভিসানীতিতে সরকারের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের উৎকন্ঠার কথা প্রকাশ পেয়েছে। সচিবালয়সহ সর্বত্র একই আলোচনা। তিনি বলেন, ডাক্তাররা অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার কথ বলেছেন। তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তাই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তার উন্নত চিকিৎসার বিদেশে প্রেরনের দাবি জানিয়েছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে একবছর যাবত আন্দোলন করছি। এ আন্দোলন ইতিমধ্যে ২২জন শহীদ হয়েছে। গুম করা হয়েছে ৭ শতাধিক নেতাকর্মীকে। জেলে নেওয়া হয়েছে ৫০ লক্ষাধিক নেতাকর্মীকে। উদ্দেশ্য একটিই গণতন্ত্রকামী মানুষকে আন্দোলন থেকে দুরে রাখা এবং একদলীয় নির্বাচন করা।
সমাবেশে প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি মৃত্যুর আগপর্যন্ত কারো সাথে তিনি আপোষ করেননি। না পিন্টুকে জেলের ভিতর হত্যা করেছে। আজকে যারা বন্দী আছেন তাদের মুক্ত করেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো।
তিনি বলেন, ৩০ বছর আগের মামলায় বিএনপির নয়জনকে ফাসি আদেশ দেওয়া হয়েছে। একনেতাকে ৭০ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এগুলো করে ২০১৪ ও ১৮ সালের মত আবার তারা ভোটবিহীন নির্বাচন করার পায়তারা করছে। সারা পৃথিবী বলছে বিগত দুটি নির্বাচন চুরি করেছো, এবার নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। সরকার বলছে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, তা দেশের মানুষতো দূরের কথা, পাগলও বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, এ লুটেরা সব খেতে খেতে নদীর বালুও খেয়ে ফেলেছে। চাঁদপুরে ৬ হাজার কোটি টাকার বালু খেয়ে ফেলেছে। আর কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের অবশিষ্টগুলোও খেয়ে ফেলবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই আওয়ামী লীগ আগেও গণতন্ত্র হত্যা করেছে। একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিলো। এবার তারা কৌশলটা পাল্টিয়েছে। আদালতকে ব্যবহার করে তারা তত্ত্বাবধায়ক প্রথা বাতিল করে অবৈধ ক্ষমতাকে জায়েজ করে নিয়েছে। এ দাবিতো আমরা করিনি। এ দাবিতে ২২ জনকে পুড়িয়ে মারলেন। বিচারকের মধ্যে ১০ জনের মধ্যে ৮ জনই এ প্রথা বাতিলের বিপক্ষে বলেছিলেন। তারপরও গায়ের জোরে করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে জনগণকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজকে গণতন্ত্র মুক্তি না পেলে, খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। আর নির্ভর করছে আপনাদের জনগণের ওপর। তাই আসুন কালবিলম্ব না করে সরকার পতনের একদফা দাবিতে রাজপথে নামি এবং এ স্বৈরশাসককে বিদায় করি।
ঢাকা দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-স্বেচ্চাসেবক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, অর্পণা রায়, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক নবী উল্লাহ নবী, মোশাররফ হোসেন খোকন, আব্দুস সাত্তার, যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম প্রমুখ।