খিলগাঁও রেলওয়ে কাঁচাবাজার ভাঙার উদ্যোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

 খিলগাঁও রেলওয়ে কাঁচাবাজার ভাঙার উদ্যোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

প্রথম নিউজ, ঢাকা : রাজধানীর খিলগাঁও রেলওয়ে কাঁচাবাজার ভেঙে বহুতল মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ব্যবসায়ীরা।

বৃহম্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে খিলগাঁও রেলওয়ে কাঁচাবাজারের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় ব্যবসায়ীরা ওই কাঁচাবাজারে ব্যবসা পরিচালনায় আরও এক বছর সময় চান।

মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা বলেন, খিলগাঁও রেলওয়ে কাঁচাবাজারের জায়গার মালিক ছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৯৮৪ সালে রেলওয়ে এই কাঁচাবাজার তৎকালীন ঢাকা সিটি কপোরেশনে হস্তান্তর করে। এরপর থেকে এই বাজারে প্রায় ৪০ বছর ধরে এক হাজার ৭৭ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী (পূবালী শপিং সেন্টার, উত্তরা মার্কেট, হকার মার্কেট) ব্যবসা করছেন। নিয়ম অনুযায়ী সিটি করপোরেশনের দোকান ভাড়া ও ট্রেড লাইসেন্স ফি পরিশোধও করছেন তারা। এছাড়া ব্যবসায়ীরা নিজ খরচে মার্কেটের মাটি ভরাট, দোকান নির্মাণ, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল ও পরিচ্ছনতা বিল বহন করছেন।

বক্তারা বলেন, এই ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যাংক লোনসহ বিভিন্নভাবে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া দীর্ঘদিন মার্কেটে ব্যবসা পরিচালনা করায় বিভিন্ন কোম্পানির তাদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। আবার অনেক ব্যবসায়ী ক্রেতাদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানতে পারেন এই মার্কেট ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছে ডিএসসিসি। হঠাৎ এমন পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে হতাশ ব্যবসায়ীরা।

এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের সময় না দিয়ে মার্কেট ভাঙা হলে ঋণ পরিশোধ ও পাওনা আদায় কোনোমতেই সম্ভব হবে না জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন সিটি করপোরেশন অন্তত এক বছর সময় না দিলে ব্যবসায়ীদের পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় বসা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। তাই গত ২ অক্টোবর বিষয়টি অবগত করে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বরাবর আবেদন করেছেন তারা।

খিলগাঁও রেলওয়ে কাঁচাবাজারের পূবালী শপিং সেন্টারের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এই মার্কেট না ভাঙতে গত ১৬ অক্টোবর উচ্চ আদালতে তারা একটি রিট করেছেন। এই রিটে ডিএসসিসি ও বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৮ সেপ্টেম্বর রেলওয়ের ভূমি শাখার এক অফিস আদেশে এই মার্কেটের জায়গায় সিটি করপোরেশন যাতে বহুতল মার্কেট করতে না পারে, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। কিন্তু কোনো ক্রমেই সিটি করপোরেশনের তৎপরতা বন্ধ হচ্ছে না। তাই তারা আজ এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছেন।

মানববন্ধনে পূবালী শপিং সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান মুন্সি, উত্তরা মার্কেটে সভাপতি বাবুল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক টিপু মিয়া, সিটি করপোরেশনের হকার মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির নেতা এমএ লতিফ, তাসাদ্দেক হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।