‘কোল্ড ডে কন্ডিশন’, উত্তরে বৃষ্টির আভাস

‘কোল্ড ডে কন্ডিশন’, উত্তরে বৃষ্টির আভাস

প্রথম নিউজ, অনলাইন:  আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেছেন, ‘শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও শৈত্যপ্রবাহের মতোই শীত অনুভূত হচ্ছে। এটাকে বলা হয় ‘কোল্ড ডে কন্ডিশন’। অর্থাৎ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না নামলেও তীব্র শীতের অনুভূতি হচ্ছে। মধ্যরাত থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা, উত্তরের বাতাস, জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকা এবং ঊর্ধ্বাকাশের জেট স্ট্রিমের দক্ষিণমুখী বিস্তার ও নিম্নমুখী বিচরণ এই ঠাণ্ডার অনুভূতি হঠাৎ বাড়িয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন। 

আবুল কালাম বলেন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ৫ ডিগ্রির নিচে নেমে এলে হাড়-কাঁপানো শীত অনুভূত হয়। এ রকম পরিস্থিতি শুক্রবারও থাকতে পারে। শনিবার থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে। ৯ জানুয়ারি থেকে আবার তাপমাত্রা কমে তীব্র শীত শুরু হতে পারে। এ সময় দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহও শুরু হতে পারে।

বৃহস্পতিবার সারা দিনই রাজধানী ঢাকা ছিল কুয়াশার চাদরে ঢাকা। ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল মাত্র ২ দশমিক ২ ডিগ্রি। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি। বিকাল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আরেক আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, ‘শীতকালে ঢাকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামাও স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য বেশি থাকায় এতটা শীত অনুভুত হয় না। দেশের অনেক অঞ্চলেই গতকাল অনুভূত তাপমাত্রা ছিল অনেকটা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের মতো। কিন্তু প্রকৃত তাপমাত্রার হিসাবে দেশে মৃদু শৈত্যপ্রবাহও নেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায়ই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ৫ ডিগ্রির নিচে নেমে এসেছিল। ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জের নিকলী, মানিকগঞ্জের আরিচা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে তাপমাত্রার পার্থক্য ৫ ডিগ্রির নিচে ছিল। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগের বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ; রংপুর বিভাগের রংপুর; ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ; চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা ও চাঁদপুর এবং বরিশাল বিভাগের বরিশাল ও ভোলায় তাপমাত্রার এই পার্থক্য ৫ ডিগ্রির নিচে ছিল। ফলে এসব অঞ্চলে শীতের তীব্রতাও বেশি ছিল।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম জানান, গতকাল দেশের দক্ষিণের বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে কুয়াশার ঘনত্ব তুলনামূলক কম ছিল। কিন্তু দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ঘন কুয়াশা ছিল। নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা ১৫০ মিটারের নিচে নেমে এসেছে গতকাল।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, দেশের উত্তরাংশ, বিশেষ করে রাজশাহী, রংপুর ও সিলেটে আগামী ৭ বা ৮ জানুয়ারি হালকা বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পর ৯ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতের তীব্রতা আবার অনেকটাই বাড়তে পারে।