কমডোর গোলাম রব্বানী হত্যা : খালাস পাওয়া বিলাই সাইফুলের যাবজ্জীবন

 কমডোর গোলাম রব্বানী হত্যা : খালাস পাওয়া বিলাই সাইফুলের যাবজ্জীবন

প্রথম নিউজ, ঢাকা : নৌ-বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল আলম রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আসামি সাইফুলকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানামূলে তাকে পুনরায় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

আদালত সূত্র জানায়, অবসরপ্রাপ্ত কমডোর গোলাম রাব্বানী বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যা মামলার সাক্ষী ছিলেন। ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় তাকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিন পর মারা যান তিনি। ওই সময়ে কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (কেইপিজেড) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।

ঘটনার পর ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল কেইপিজেডের সাইট ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম এমতাজুল ইসলাম পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৮ আগস্ট সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। তারা হলেন, আবু নাসের চৌধুরী, হুমায়ুন কবির চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুল, মনছুর আলম, মো. সেলিম, সোহেল প্রকাশ আবদুল মালেক ও মো. হাশেম।

বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০০৫ সালের ৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার আদালত রায় ঘোষণা করেন। এতে মো. সেলিম, মো. হাশেম ও সোহেলেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এজাহারে উল্লিখিত আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া। এছাড়া আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুল, মনছুর আলমকে বেকসুর খালাস প্রদান করে আদালত।

নিম্ন আদালতের রায়ের পর মামলার বাদী হাইকোর্টে দুই আসামি আবু নাসের ও হুমায়ুন কবিরের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে এবং আসামি সাইফুলের খালাসের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। ২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির চৌধুরীর সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন। এছাড়া খালাস পাওয়া আসামি মো. সাইফুল ইসলামের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে নতুন করে রায় দিতে বিচারিক আদালতে নথি ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অশোক কুমার দাশ ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের পর দুজন সাক্ষী থেকে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরপর গতকাল (বুধবার) যুক্তিতর্ক শেষ হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) আদালত রায় ঘোষণা করেন। এতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে আসামি সাইফুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।