ইরান-দ. কোরিয়া কূটনৈতিক চাপান-উতোর
সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য তেহরানকে ‘শত্রু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইওল।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য তেহরানকে ‘শত্রু’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইওল। উত্তর কোরিয়া থেকে যে হুমকি আসছে তার সঙ্গে তুলনা করেছেন তেহরানকে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইরান উভয়ে উভয় দেশের রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে। এর মধ্যদিয়ে দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলছে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট সোমবার আবুধাবিতে অবস্থানরত দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষ বাহিনী পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ‘বন্ধুপ্রতিম দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এরপরই তিনি ইরান নিয়ে সমালোচনা করেন। বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রধর উত্তর কোরিয়া থেকে যেরকম হুমকির মুখে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরানের পক্ষ থেকে একই রকম হুমকিতে আছে আমিরাত। ইয়ুন বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের শত্রু হলো সবচেয়ে হুমকির দেশ ইরান।
তার এ মন্তব্যের পর ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা জানায়, ইয়ুনের ‘হস্তক্ষেপমূলক বিবৃতি’ তদন্ত করছে তারা।
এরই মধ্যে বুধবার ইরানে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেজা নাজাফি। তার কাছে ইয়ুনের মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানান। এ খবর জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা। ইরানের প্রতি সিউল ‘অবন্ধুসুলভ মনোভাব’ দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নাজাফি। এক্ষেত্রে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকে ইরানের তহবিল জব্দ করার ইস্যুও সামনে আনেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় জব্দ করা এসব অর্থের মধ্য থেকে ৭০০ কোটি ডলার ছাড় দিতে সিউলের প্রতি বার বার আহ্বান জানিয়েছে ইরান।
এর জবাবে বৃহস্পতিবার সিউলে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত সাঈদ বাদামছি শাবেস্তারিকে তলব করেন দক্ষিণ কোরিয়ার ফার্স্ট ভাইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো হিউন-ডং। তার কাছে তিনি সিউলের অবস্থান আরও একবার ব্যাখ্যা করেছেন বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিম সু-সুক। তিনি বলেন, আমরা বার বার যেমন ব্যাখ্যা করেছি- সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমাদের যেসব সেনা দায়িত্ব পালন করছেন, তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ইয়ুন ওই মন্তব্য করেছেন। এ নিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সম্পর্কের কিছু নেই। বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়া-ইরান সম্পর্কের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। ইরানের সঙ্গে আমাদের সরকারের সম্পর্ক অপরিবর্তিত থাকবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহ্যাপের তথ্যমতে, সিউলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটাই বলেছে যে- সিউল-তেহরান সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইয়ুনের মন্তব্য সম্পর্কিত নয়। এ নিয়ে ইরানকে অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া না দেখানোর আহ্বান জানানো হয়।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: