আবারো মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে: চরমোনাই পীর
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই সময়েও এদেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, এখন দেশে চরম বৈষম্য চলছে। যা অতীতের সব ইতিহাসকে ম্লান করে দিয়েছে। মানুষ এখনো স্বাধীন নয়। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। নাগরিক অধিকার ও ভোটাধিকার খর্ব করা হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই সময়েও এদেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত। এটা স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী। মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আবারো মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনের আইএবি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দলটির কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বিভাগের উদ্যোগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনার এই অনুষ্ঠান হয়। এতে একজন সংখ্যালঘুসহ জীবিত ও মৃত প্রায় একশ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
দলটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম এবং নূরুজ্জামান সরকারের পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বীর প্রতীক, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ সভাপতি মো. ওয়াদুদ, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির প্রমুখ।
এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বক্তব্য দেন- আব্দুস সাত্তার সরকার, ক্যাপ্টেন (অব.) মাওলানা আবুল হাশেম (নেত্রকোনা), জিএম কিবরিয়া (খুলনা), খালেকুজ্জামান (নাটোর), আবুল হোসেন (হবিগঞ্জ) প্রমুখ।
চরমোনাই পীর বলেন, মুক্তিযুদ্ধে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়ে দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করেছিল। আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর চেতনার নামে দেশপ্রেমিক ও ইসলামপন্থীদেরকে দাবিয়ে রাখতে বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও রণাঙ্গনের যোদ্ধাদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইসলাম সাংঘর্ষিক নয়। কেননা আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম ইমানি চেতনা ও শহিদি তামান্না নিয়েই করেছিলাম। এখন চেতনার নামে মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা যারা করছেন তারা মুক্তিযুদ্ধের ‘মু’ এর অর্থও জানে না। কাজেই আমি মুসলমান আগে, তারপর বাঙালি।
প্রিন্সিপাল মাদানী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, দস্যুতামুক্ত দেশ গড়ার লক্ষে যুদ্ধ হয়েছিল। ৩০ লাখ শহিদের ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা পাওয়ার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নামীয় সরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্বচ্ছ তালিকা তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে।
মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ বলেন, ইসলামী চেতনাকে বিনাশ করাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। মুক্তিযুদ্ধে আলেম ও ইসলামপন্থীদের অবদানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে, ইসলামের ভিত্তিতেই দেশ স্বাধীন হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: