লেবানন সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়ছে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা
এ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে হিজবুল্লাহর সদস্যরা।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ফিলিস্তিনিদের হামলায় বিপর্যস্ত ইসরায়েলের ভেতর প্রবেশ করেছে লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর সদস্যরা। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে হিজবুল্লাহর সদস্যরা। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর সন্দেহভাজন কয়েকজন সদস্যের অনুপ্রবেশে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বাধা দেওয়ার সময় লেবানন সীমান্তে গোলাগুলি ও বিস্ফোরেণের ঘটনা ঘটেছে।
লেবানন সীমান্তে সংঘর্ষের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন হিজবুল্লাহ সংশ্লিষ্ট আল-মানার টেলিভিশন চ্যানেলের একজন প্রতিনিধি। ভিডিওতে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের ধায়রা গ্রামের সীমান্তে সন্দেহভাজন হিজবুল্লাহ সদস্যদের সাথে ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট এক্সে এক বার্তায় ইসরায়েলি বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেন, লেবাননের থেকে সন্দেহভাজন কয়েকজনের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এসব এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সৈন্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। হিজবুল্লাহর সিনিয়র কর্মকর্তা হাশেম সাফিদ্দিন বলেন, আমাদের ইতিহাস, আমাদের অস্ত্র ও রকেট তোমাদের সাথে রয়েছে। আমাদের সবকিছুই তোমাদের সাথে রয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ফিলিস্তিনের পক্ষে অংশ নেয় হিজবুল্লাহ। এ সংঘর্ষে হিজবুল্লাহর অংশগ্রহণ নিয়ে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম হারেতজের সাংবাদিক জিডিওন লেভি। তিনি বলেন, লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহ এ যুদ্ধে অংশ নিলে বিপাকে পড়বে ইসরায়েল। আমাদের একটি ভিন্ন বাস্তবতার মুখে পড়তে হবে। হিজবুল্লাহ অংশ নিলে ইসরায়েলকে দুটি ফ্রন্টে যুদ্ধ করতে হবে।
আলজাজিরার এক সাক্ষাৎকারে জিডিওন বলে, হিজবুল্লাহর সাথে যদি অধিকৃত পশ্চিম তীরও যুক্ত হয় তাহলে একটি নতুন খেলা শুরু হবে। ইসরায়েলকে এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে যা আগে কখনো হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় হামলা চালালে বা কোনো স্থলে আক্রমণ হলে সংঘর্ষ অন্যদিকে মোড় নেবে এমন বার্তা দেওয়ার পরপরই শেবা ফার্মে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। মূলত এ অঞ্চলটি লেবাননের অধিকৃত এলাকা। ফলে সীমানা অতিক্রম না করেই এ অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে দলটি।
আলজাজিরা বলছে, গত কয়েক বছর ধরে নিজেদের অস্ত্র ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করছে হিজবুল্লাহ। ফলে দলটির কাছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অস্ত্র রয়েছে। এসব অস্ত্র দিয়ে ইসরায়েলের যে কোনো স্থানে হামলা করতে সক্ষম হিজবুল্লাহ। এ ছাড়া দলটির সেনাদের অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ রয়েছে। ফলে এ সংঘর্ষে তারা অংশ নিলে আঞ্চলিক সংঘর্ষের দিকে গড়াতে পারে।
ফিলিস্তিনিরা এবার ইসরায়েলিদের বিপক্ষে নতুন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করছে। আলজাজিরা জানায়, ফিলিস্তিনি গ্রুপ আল কাসেম ব্রিগেড এ নতুন অস্ত্র ব্যবহার করছে।
সোমবার আলজাজিরার প্রতিনিধি জামিলেহ আবু জানুনা আরও জানান, আল কাসেম ব্রিগেডের ভাষ্যমতে, গাজাতেই এ অস্ত্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। এগুলোই এখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। নতুন এ অস্ত্রগুলো কাঁধে বহনকারী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সংশ্লিষ্ট যা দিয়ে ইসরায়েলের আকাশপথে করা হামলার প্রতিরোধ গড়ে তোলা হচ্ছে। আল কাসেম ব্রিগেডের প্রকাশ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, তাদের যোদ্ধারা তাদের লক্ষ্যবস্তুতে গুলি চালাচ্ছে এবং সেখানে আঘাত করতে সক্ষম হচ্ছে।