র্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ‘জটিল প্রক্রিয়া’ : যুক্তরাষ্ট্র
আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত অষ্টম অংশীদারত্ব সংলাপ শেষে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের যৌথ ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রথম নিউজ ডেস্ক: র্যাবের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দেশটির সহযোগিতা চেয়েছে ঢাকা। আর ওয়াশিংটন বলছে, এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। এ বিষয়ে আরও কাজ করতে হবে। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনুষ্ঠিত অষ্টম অংশীদারত্ব সংলাপ শেষে ঢাকা ও ওয়াশিংটনের যৌথ ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বেলা ১১টার পর শুরু হওয়া বৈঠক চলে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী। বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়। ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং সন্ত্রাসবাদ ও আন্তর্জাতিক অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টার বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছি। আমরা শুধু ব্যাখ্যাই করিনি, আমরা এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য উন্মুখ। আশা করছি সামনে সুফল আসবে।
এ বিষয়ে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় আমরা চুপ থাকতে পারি না। যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকারকে সবসময়ই গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ বিষয়টি অনেক জটিল। এ বিষয়ে আরও কাজ করার আছে। বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে ন্যুল্যান্ড বলেন, বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘ ৫০ বছরের, সামনে এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে। ইন্দো প্যাসিফিক কৌশলের আওতায় এ সম্পর্ক নিরাপত্তা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন ইস্যুতে আরও শক্তিশালী হবে।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, গণতান্ত্রিক চর্চা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শ্রম অধিকার ও ধর্মীয় সম্প্রীতির মতো বিষয়েও আমরা আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর উপায় এবং সুনীল সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়েও আমরা গভীর আলোচনা করেছি। আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সম্পর্কে আমাদের মতামত বিনিময় করেছি এবং জাতীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তা এবং ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, উভয়পক্ষ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে একে অপরকে সহযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এসব বিষয়ে আমরা আসন্ন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংলাপে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব। পররাষ্ট্রসচিব জানান, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগসহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আগামী জুনের শুরুতে আসন্ন উচ্চ-স্তরের অর্থনৈতিক অংশীদারি পরামর্শে এবং চলতি বছরেই টিআইসিএফে এসব বিষয়ে আরও আলোচনা করা যাবে।
আলোচনায় রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি: ঢাকা ও ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত দুই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় ছিল চলমান রাশিয়া ও ইউক্রেন পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার আগ্রহের কথা জানিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধের মধ্যে এ বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র শান্তি ও নিরাপত্তা চায়। বহুবার রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু মস্কো শোনেনি। তারা আন্তর্জাতিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।
ন্যুল্যান্ড বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে বৈশ্বিকভাবে গণতন্ত্র ও আন্তর্জাতিক আইন এখন হুমকির মুখে। এমন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার সব অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে অষ্টম অংশীদারত্ব সংলাপে অংশ নিতে তিন দিনের সফরে শনিবার ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া ন্যুল্যান্ড।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews