রাজধানীতে তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু
মঙ্গলবার ভোর পৌনে চারটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকায় ফাতেমা তুজ জোহরা স্বর্ণা ওরফে অর্পণা (২৬) নামের এক তরুণীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর পৌনে চারটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র। পুলিশ ধারণা করছে, ফাতেমা কোনো কিছু খেয়েছেন। সেখান থেকে বিষক্রিয়ায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে ফাতেমার স্বজনদের অভিযোগ, ফাতেমাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ফাতেমা সপরিবার মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনে সি ব্লকে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি ছিলেন মা-বাবার একমাত্র সন্তান। ফাতেমা শাহ আলী থানা এলাকায় অ্যানিমেল শেল্টার নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এক বছর ধরে চাকরি করতেন। প্রতিষ্ঠানটি বেওয়ারিশ কুকুরের স্বাস্থ্যসেবা দেয়।
ফাতেমার মা শেলী সুলতানা মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে বলেন, সোমবার বিকেলে ফাতেমার সহকর্মী জিসান হাওলাদার তাঁকে (ফাতেমা) মুঠোফোনে শাহ আলী থানা এলাকায় তাঁর বাসায় ডেকে নিয়ে মারধর করেন। এরপর সন্ধ্যার দিকে ফাতেমাকে তাঁদের বাসার সামনে ফেলে যান। স্বজনেরা আহত অবস্থায় ফাতেমাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতাল নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে মঙ্গলবার ভোর পৌনে চারটার দিকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শেলী সুলতানা বলেন, ফাতেমাকে পছন্দ করতেন জিসান। সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফাতেমার বন্ধু সৈয়দ নাঈম আহমেদ মর্গে সাংবাদিকদের বলেন, মুন্না নামের এক যুবকের সঙ্গে ফাতেমার বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। চার দিন আগে মুন্না তাঁকে মারধর করেন ও মাথায় আঘাত করেন।
শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, গতকাল ফাতেমা কোনো কিছু খেয়েছিলেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে হাসপাতালে মারা যান। ফাতেমার সঙ্গে জিসানের সম্পর্ক ছিল। তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির জেরে সোমবার দুপুরে জিসান নিজের বাসায় সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। পরে প্রতিবেশীরা টের পেয়ে সিলিং ফ্যান থেকে জিসানকে নামিয়ে এনে হাসপাতালে চিকিৎসা করান।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ফাতেমার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা যাবে।