যানজটে অচল সাভার-চন্দ্রা-বাইপাইল

‘৮ মিনিটের পথ ১০ ঘণ্টায় পাড়ি, কখন যাব বাড়ি’

যানজটে অচল সাভার-চন্দ্রা-বাইপাইল

 প্রথম নিউজ, সাভার (ঢাকা): পোশাক কারখানা ছুটি হয়ে গেছে। তাই কয়েকজন শ্রমিক মিলে একটি বাস রিজার্ভ করে সাভারের জামগড়া থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ নীলফামারীর জলঢাকার উদ্দেশে রওনা দেই। বাসটি ছাড়লেও ৪ ঘণ্টায় ৪ মিনিটের পথ পেরিয়ে বাইপাইলে পৌঁছায়’- এভাবেই সীমাহীন দুর্ভোগের কথা বলছিলেন ঈদে নাড়ির টানে বাড়ির যেতে চাওয়া যাত্রী মোহসীন আলী।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের শ্রীপুর বাস স্ট্যান্ডে যানজটে আটকে থাকা মোহসীন আলী বলেন, ‘কারখানা ছুটি হওয়ায় আমরা নীলফামারীর জলঢাকার উদ্দেশে জামগড়া থেকে মৌমিতা পরিবহনের একটি বাস রিজার্ভ করি। বিকেল ৪টায় আমাদের গাড়ি জামগড়া থেকে ছাড়ে। গাড়ি ছাড়লেও চাকা ঘুরতেই লেগেছে ঘণ্টা খানেক। প্রায় ৪ ঘণ্টায় আমরা মাত্র ৪ মিনিটের পথ বাইপাইলে পৌঁছাই। ভেবেছিলাম বাইপাইল থেকে হয়তো গাড়ির চাকা ঘুরবে। কিন্তু সেখানে আরও বেশি যানজট। সড়কে হাজার হাজার যাত্রী। মানুষের জটলা আর গাড়ির চাপে আমরা সময়ের হিসাব করা বাদ দিয়েছি।

অপর যাত্রী খাইরুল বলেন, ‘দুই-চারবার গাড়ির চাকা ঘুরলেও বন্ধ হয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। চাকা আর ঘুরে না। যানজটে আটকে পড়ে এমনিই ভোগান্তি চরমে, তার ওপর প্রচণ্ড গরম। এবারের যাত্রা যেন অন্য এক অভিজ্ঞতা। আমরা সবাই একই কারখানায় চাকরি করি। সবাই পরিচিত। তাই গল্প আর আড্ডায় ১০ ঘণ্টা কাটিয়ে দিয়েছি। যদি অপরিচিত যাত্রীদের সঙ্গে রওনা করতাম তাহলে হয়তো আরও বেশি খারাপ লাগতো।’

মৌমিতা গাড়ির চালক শাহিনুর বলেন, ‘১০ ঘণ্টায় মাত্র ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছি। সড়কে এবার গাড়ির এত চাপ হবে কল্পনাও করতে পারিনি। গাড়ির চাকা একবার একটু ঘুরলে স্টার্ট বন্ধ করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে। ১০ ঘণ্টায় ৮ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়েছি। গন্তব্যে পৌঁছতে কতক্ষণ লাগবে তার কোনো ঠিক নাই।’ 

শুধু মৌমিতা পরিবহন নয়, নবীনগর-চন্দ্রা মাহাসড়ক রুটের প্রায় সব যানবাহনের অবস্থাই এমন। তারপরেও হাজারো মানুষ এখনো গাড়ির অপেক্ষায় সড়কে পাশে কিংবা বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছেন।

সাভার হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আতিকুর রহমান বলেন, আমাদের হাইওয়ে থানার পক্ষ থেকে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ২ শতাধিক পুলিশ কাজ করছে। তারা যানজট নিরসনে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রিজার্ভ গাড়ি সড়কে বেড়েছে যা অতিরিক্ত। এছাড়া গরুর ট্রাক এখনো ঢাকায় প্রবেশ করছে। আমরা যানজট নিরসনের চেষ্টা করছি।