গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ
আজ বুধবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশে গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো যে প্রস্তাব দিয়েছিল তা গ্রহণ করেনি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গ্যাস বিতরণ প্রতিষ্ঠানগুলো গত সপ্তাহে দ্বিগুণের বেশি দাম বাড়ানোর প্রস্তাবপত্র জমা দিলেও দায়সারা সেই প্রস্তাব বিধিসম্মত না হওয়ায় নাকচ করে দেয় বিইআরসি।
আজ বুধবার বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত এক মাস ধরে দেশে গ্যাস সরবরাহ সংকট চলছে। সংকট শুরু হলে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো গত সপ্তাহে দ্বিগুণের বেশি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।
পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানের গ্যাস সরবরাহ সংকট আগামী এক মাসেও সমাধান হবে না। গ্যাস সংকটের কারণে বাসায়, শিল্পকারখানা ও মহেশখালীতে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনালের একটি বন্ধ হয়ে আছে। বাকি একটি দিয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। গতকাল (মঙ্গলবার) মাত্র ৪০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়েছে। দিনে মোট সরবরাহ ছিল ২৭০ কোটি ঘনফুটের মতো।
বিইআরসির কর্মকর্তারা জানান, গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করতে হলে প্রবিধানমালা মেনে প্রস্তাব জমা দিতে হবে। বিতরণ কোম্পানি তা মানেনি। নিরীক্ষা প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় নথি জমা দেয়নি। তাই তাদের নিয়ম মেনে আবেদন করতে বলা হয়েছে। তেলের পর গ্যাসের দাম বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বাড়ার চরম ঝুঁকি তৈরি হবে।
এর আগে, ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন পেট্রোবাংলাকে চিঠি দিয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। ভর্তুকির চাপ সামলাতে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায় তারা। এরপর ছয়টি গ্যাস বিতরণ কোম্পানি অভিন্ন প্রস্তাব তৈরি করে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবে বাসাবাড়ির দুই চুলার মাসিক বিল হবে দুই হাজার ১০০ টাকা, যা বর্তমানে ৯৭৫ টাকা। অন্যদিকে এক চুলার মাসিক বিল হবে দুই হাজার টাকা, যা বর্তমানে ৯২৫ টাকা।
এ ছাড়া, শিল্প খাতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা ২৪ পয়সা এবং ক্যাপটিভে (শিল্পকারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস) ১৩ টাকা ৮৫ পয়সার স্থলে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করে একাধিক বিতরণ প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, সারাদেশে এখন দিনে গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে ২৩০ কোটি ঘনফুটের (৭৮ শতাংশ) বেশি আসে নিজস্ব গ্যাসক্ষেত্র থেকে। আর কাতার এবং ওমানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি হয় মোট সরবরাহের ১৭ শতাংশ। আর ৫ শতাংশ আন্তর্জাতিক খোলাবাজার থেকে প্রয়োজন বুঝে কেনা হয়। যদিও গত দুই মাস ধরে এটি কেনা বন্ধ আছে। মাত্র ৫ শতাংশ গ্যাসের বাড়তি দামের নামে দেশে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা দূরে থাক, বাড়ানোরই কোনো যৌক্তিকতা নেই।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: