বিশ্বকাপের আগে টাইগারদের শেষ প্রস্তুতি শুরু আজ

বিশ্বকাপের আগে টাইগারদের শেষ প্রস্তুতি শুরু আজ

প্রথম নিউজ, খেলা ডেস্ক: এশিয়া কাপ থেকে ফিরে মাঠে নামতে পারেনি বাংলাদেশ দল। গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অনুশীলন শুরু করলেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি। ইনডোরে ব্যাটিং-বোলিং করলেও মূল মাঠে মেলেনি প্রস্তুতির সুযোগ। যদিও সফরকারী কিউইরা নিজেদের অনুশীলনটা ভালো ভাবে করেই নিয়েছেন ঢাকায় পা রাখার পর থেকে। তবে প্রস্তুতি ছাড়া মাঠে নামলেও নিজেরা প্রস্তুত বলে দাবি করেছেন এই সিরিজের অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। বিশেষ করে প্রতিপক্ষের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে কাজ করার কোনো সুযোগই হয়নি। তবে অধিনায়ক জানিয়েছেন মাঠে প্রস্তুতি নিতে না পারায় তারা মানসিক ভাবেই নিজেদের প্রস্তুতি রাখছে। তিনি বলেন, ‘কাজ (অনুশীলন) করার তো সুযোগ নাই। যা করার মানসিকভাবে করা লাগছে, মাইন্ড গেম খেলা লাগছে। দেখি কতোটুকু সফল হওয়া যায়।

টেকটিক্যালি তো কিছু করতে পারিনি, গত কিছুদিন অনুশীলন করতে পারিনি। জানি না আজও কতোখানি প্র্যাকটিস করতে পারবো। হয়তো প্র্যাকটিস ছাড়াই মেইন ম্যাচে খেলা লাগতে পারে। এটা মানসিকতার খেলা। ওদের স্পিনও ভালো, কোয়ালিটি স্পিনারও কিন্তু আছে।’ আজ দুপুর ২টায় মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে গড়াবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ। যদিও এই ম্যাচেও রয়েছে বৃষ্টির শঙ্কা। আবহাওয়া পূর্বাভাস তাই জানাচ্ছে।

কিউইদের বিপক্ষে সিরিজে দলের বেশির ভাগ সেরা ক্রিকেটারকেই রাখা হয়েছে বিশ্রামে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছাড়াও ব্যাটিং ভরসা মুশফিকুর রহীম, অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ, পেসার তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলামরা নেই দলে। দীর্ঘদিন পর ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেছেন সাবেক অধিনায়ক ও দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। এ ছাড়াও ফেরানো হয়েছে আরেক অভিজ্ঞ মাহমুুদউল্লাহ রিয়াদকেও। প্রশ্ন হচ্ছে এই দু’জন একাদশে থাকবেন কিনা। বলার অপেক্ষা রাখে না তামিমের সঙ্গে লিটনকেই ওপেন করতে দেখা যাবে। কারণ বিশ্বকাপের জন্য ইনজুরি থেকে তামিম কতোটা ফিট তাও দেখে নিতে চাইছে নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই সঙ্গে ফর্মে ফিরতে পারেন কিনা সেটিও দেখার বিষয় রয়েছে। অন্যদিকে বলা হচ্ছে মাহমুুদউল্লাহ এই সিরিজে ভালো করলে মিলতে পারে বিশ্বকাপে খেলার টিকিট। যদিও সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের জন্য বলা চলে এক রকম অগ্নিপরীক্ষার সিরিজ। 

তামিম ও লিটন ওপেন করলে ওয়ান ডাউনে কে সেই প্রশ্ন তো থাকছেই। কারণ ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাই ধারণা করা হচ্ছে এই জায়গাতে সুযোগ দেয়া হতে পারে সৌম্য সরকার বা জাকির হাসানের। আবার এনামুল হক বিজয়কে বিবেচনাও করা হতে পারে। তবে বিজয়ের চেয়ে এগিয়ে আছে সৌম্যের খেলার সম্ভাবনা কারণ প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের বিশ্বকাপ ভাবনাতে সবচেয়ে এগিয়ে সৌম্যই। কারণ মাহমুুদউল্লাহ ব্যর্থ হলে সৌম্যকে ৭ নম্বরে খেলানোর একটি পরিকল্পনা রয়েছে প্রধান কোচের। এরপর নূরুল হাসান, শেখ মেহেদী ব্যাটিং ভার সামলাবেন। রিয়াদ ও সৌম্যের দলের ভূমিকা নিয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘ভূমিকা নিয়ে আমি বলতে চাই না। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। যদি দ্রুত উইকেট পড়ে যায় রিয়াদ ভাই ব্যাটিংয়ে গেলে ৩০-৩৫ ওভারের গেম থাকলে উনি উনার মতো গেম খেলবে। এটা বলার দরকার নেই, উনি অনেক ম্যাচিউরড। একই কথা সৌম্যর ক্ষেত্রেও। যেখানেই সুযোগ পাবে তারা রান করার চেষ্টা করবে। শুধু তারা দু’জন না, প্রত্যেক ব্যাটারের দায়িত্ব রান করা। 

আর পেস আক্রমণে মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও তানজিম সাকিব খেলতে পারেন। যেহেতু সাকিব নেই তাই একাদশে মূল স্পিন আক্রমণের দায়িত্ব থাকবে নাসুম আহমেদের হাতেই। নাসুম আর মেহেদীকে নিয়ে লিটন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক বোলার ভারতের বিপক্ষে ভালো করেছে। সাকিবও প্রথম ম্যাচ খেলে দুর্দান্ত বোলিং করেছে। সবমিলে বোলিং ডিপার্টমেন্ট নিয়ে কিছু বলার নেই। সবাই শতভাগ দেয়ার কারণেই ম্যাচটা জিতেছি।’ 

অন্যদিকে তামিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটার থাকা দলের জন্য উপকার বলেই মনে করেন লিটন। তিনি বলেন, ‘দুইজন সিনিয়র খেলোয়াড় থাকলে তো অবশ্যই সব দিক থেকে হেল্প হয়। অনেক দিন পর তারা খেলতে এসেছেন। আমি চাই না কোনো কিছু নিয়ে তাদের চাপ দিতে। তারা গেমটা এনজয় করুক। বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচেই এনজয় করতে পারলে সাফল্যের সম্ভাবনা বেশি থাকে।’