বাড্ডা ও কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে গণমিছিলে নেতাকর্মীদের ঢল

জুমা নামাজের পর বেলা ৩টায় এ গণমিছিল শুরু হয়।  তবে এর আগে থেকেই জড়ো হয় নেতাকর্মীরা।

বাড্ডা ও কমলাপুর স্টেডিয়ামের সামনে গণমিছিলে নেতাকর্মীদের ঢল

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গণমিছিলে অংশ নিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজধানীর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে নেতাকর্মীদের ঢল। জুমা নামাজের পর বেলা ৩টায় এ গণমিছিল শুরু হয়।  তবে এর আগে থেকেই জড়ো হয় নেতাকর্মীরা।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে গণমিছিলটি মালিবাগ আবুল হোটেলের সামনে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

২৯ জুলাইয়ের অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রায় এক সপ্তারও বেশি সময় পর ঢাকার দুই স্থানে গণমিছিলের কর্মসূচি দেয় বিএনপি। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আরেকটি গণ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তার সঙ্গে আরো থাকবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সেখানেও নির্ধারিত সময়ের আগেই লোকজন আসতে শুরু করেছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, গণমিছিলের উভয় স্থানেই বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তাদের হাতে রয়েছে সরকার পদত্যাগের দাবিতে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোড়ে মোড়ে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে সমন্বয়হীনতার প্রেক্ষিতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে চায় দলটি। ২৮ জুলাই ঢাকার মহাসমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমের পরের দিনের অবস্থান কর্মসূচিতেও ব্যাপক গণজমায়েতের মাধ্যমে শোডাউন করে সরকারকে চাপে ফেলতে চেয়েছিল বিএনপি। কিন্তু তা আর হয়নি। এজন্য নাখোশ হাই কমান্ড দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যর্থ নেতাদের চিহ্নিত করে এরই মধ্যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব কোনোভাবেই সামনের কর্মসূচিগুলোতে নেতাকর্মীদের কেউ যেন ঘরে বসে না থাকে সেই বার্তা দিয়েছে।

গত বুধবার রাজধানীরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকায় গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। এর সঙ্গে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও রয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন স্পটে এক দফা আন্দোলনের শরিক দলগুলোও গণমিছিল করার কথা জানিয়েছে।

সরকার পতনের একদফা দাবিতে রাজধানীতে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণে গণমিছিলের রোডম্যাপ দিয়েছে বিএনপি।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি বাড্ডা সুবাস্ত টাওয়ার থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত গণমিছিল করবে। একই সময়ে কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে মালিবাগ মোড় পর্যন্ত গণমিছিল করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত গণমিছিলে নেতৃত্ব দিবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সঙ্গে থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব:) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, শামসুজ্জামান দুদু প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

এ গণমিছিলের সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। সঙ্গে রয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক।

ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের গণমিছিলে নেতৃত্ব দিবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তার সঙ্গে থাকবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি প্রমূখ নেতৃবন্দ।

ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের গণমিছিল সমন্বয় করবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম। সঙ্গে রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সম্পাদক, সহ-সম্পাদক এবং নির্বাহী সদস্যরা সুবিধামতো ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণ গণমিছিলে অংশগ্রহণ করবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

শরিক দলগুলোর গণমিছিল

একদফা আন্দোলনের শরিক দলগুলোও পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে গণমিছিল করার কথা জানিয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চ বিকাল চারটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে, ১২ দলীয় জোট বিকাল ৪টায় বিজয়নগরের পানির ট্যাঙ্কির সামনে থেকে, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বেলা ৩টায় বিজয়নগরের আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে এলডিপি বেলা ৩টায় এফডিসি সংলগ্ন দলীয় অফিসের সামনে থেকে, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি বিকাল ৩টায় নটরডেম কলেজের বিপরীত পাশের সড়কে গণফোরাম চত্বর থেকে , গণঅধিকার পরিষদ (নুর) বিকাল সাড়ে ৩টায় পুরানা পল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে, গণঅধিকর পরিষদ (রেজা কিবরিয়া) বেলা ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে,  লেবার পার্টি সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে, এনডিএম সন্ধ্যা ৭টায় মালিবাগ মোড় থেকে গণমিছিল বের করবে। এছাড়া যুগপৎ আন্দোলনের বাইরের দল এবি পার্টি বিকাল সকাল ১১টায় বিজয় নগরে একাত্বর চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে।