বৃটেনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি, সাবেক উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইরান

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই গুপ্তচরের নাম আলিরেজা আকবরী।

বৃটেনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি, সাবেক উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইরান
বৃটেনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি, সাবেক উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইরান

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : বৃটেনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এক বৃটিশ-ইরানি নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে তেহরান। ইরানের বিচার বিভাগ-সংশ্লিষ্ট আউটলেট মিজান বুধবার এ খবর জানিয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই গুপ্তচরের নাম আলিরেজা আকবরী। ইরানের সংস্কারপন্থী আউটলেট শার্গ ডেইলির মতে, আকবরী অতীতে ইরানের উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়া তিনি দেশটির স্ট্রাটেজিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান ছিলেন। ইরান-ইরাক যুদ্ধের অবসান ঘটাতে জাতিসংঘের রেজ্যুলুশন বাস্তবায়নকারী সামরিক সংস্থার সদস্যও ছিলেন আলিরেজা। 

তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, আলিরেজা আকবরী কিছুদিন আগে ইরানের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর সেই ফাইল আদালতে পাঠানো হয়। অভিযুক্তের আইনজীবীর উপস্থিতিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিচারকার্যে প্রমাণিত হয় যে আলিরেজা বৃটেনের জন্য গুপ্তচরবৃত্তিতে যুক্ত ছিলেন। ফলে এই অভিযোগের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড পেয়েছেন তিনি। 

এদিকে বৃটিশ সরকার ইরানের কাছে ফাঁসির কার্যকর থেকে সরে আসার দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছে, আকবরীকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। বিবিসি জানিয়েছে, আকবরীকে ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইরানের প্রেসিডেন্ট ছিলেন মোহাম্মদ খাতামি। তার অধীনেই উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন আকবরী। মোহাম্মদ খাতামি নিজে অত্যন্ত সংস্কারপন্থী মানুষ ছিলেন। 

সিএনএন জানিয়েছে, আকবরী এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করেছিলেন। কিন্তু মামলাটি পর্যালোচনা করার পর ইরানের সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, আকবরী বৃটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ এর একজন আন্ডারকভার এজেন্ট ছিলেন। তিনি বৃটেনের কাছে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। 

বৃটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। টুইটারে লেখা এক পোস্টে তিনি বলেন, ইরানকে অবশ্যই বৃটিশ-ইরানি নাগরিক আলিরেজা আকবরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধ করতে হবে এবং অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। এটি একটি রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়। বৃটেনের পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র সিএনএনকে বলেছেন যে, বৃটেন আকবরীর পরিবারের সাথে আছে। দেশটি বারবার ইরানি কর্তৃপক্ষের কাছে মৃত্যুদণ্ড বাতিলের বিষয়টি উত্থাপন করছে। বৃটেনের অগ্রাধিকার হল অবিলম্বে আকবরীর মুক্তি নিশ্চিত করা। 

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের শীর্ষ মৃত্যুদণ্ড দেয়া দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। দেশটিতে ২০২১ সালে ৩১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। গত সপ্তাহে ইরান নিরাপত্তা কর্মীদের হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই বিক্ষোভকারীকে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেছে। যার ফলে আন্তর্জাতিক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: