ধারাবাহিক অবস্থানে থাকবে আওয়ামী লীগ
গতকাল সকাল থেকে এই তিন জেলায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাইকিং করে নেতাকর্মীদের শান্তি সমাবেশে থাকতে বলা হয়েছে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচির বিপরীতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। আজ বিএনপি’র সমাবেশ ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া পুরো রাজধানীজুড়েই নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে। দলীয় সূত্র জানিয়েছে আজ বিএনপি ও সমমনা দলগুলো কেমন কর্মসূচি দেয় তা দেখে আওয়ামী লীগও ধারাবাহিক কর্মসূচি দেবে। বিএনপি’র সমাবেশ ঘিরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বেলা ৩টায় শান্তি সমাবেশের সময় নির্ধারণ করা হলেও নেতাকর্মীরা অবস্থান করবেন রাত পর্যন্ত। সমাবেশের জন্য বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ পাশে অস্থায়ী মঞ্চ বানানো হয়েছে। সেখানে দুপুর ১২টা থেকেই নেতাকর্মীদের অবস্থান করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে বিশেষ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রাজধানীতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক পাহারায় থাকবে। এদিকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি রাজধানী ঘিরে থাকা সাভার, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর জেলার নেতাকর্মীদেরও রাজধানীতে ডাকা শান্তি সমাবেশে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গতকাল সকাল থেকে এই তিন জেলায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মাইকিং করে নেতাকর্মীদের শান্তি সমাবেশে থাকতে বলা হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা মানবজমিনকে বলেন, মূলত লক্ষাধিক লোকের সমাগম করতে চায় শান্তি সমাবেশে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, বিএনপি- জামায়াত যেন কোনো ভাবেই সমাবেশের নামে সহিংসতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য সংঘবদ্ধ অবস্থান করবে দলের নেতাকর্মীরা। অতীতে তাদের সৃষ্ট অরাজকতার অভিজ্ঞতা থেকেই এ ধরনের সতর্ক অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে। আমরা সব ধরনের সহিংসতা থেকে দেশকে রক্ষা করতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এদিকে শান্তি সমাবেশে কি ধরনের বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে সে প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজউদ্দিন রিয়াজ মানবজমিনকে বলেন, সমাবেশে এক লাখ লোকের সমাগম করবো। রাজধানীতে রাজনৈতিক সহিংসতা করার জন্য বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছে। আর আমাদের সমাবেশ হচ্ছে শান্তির সমাবেশ। তবে এবারের শান্তি সমাবেশে আমরা রাত পর্যন্ত অবস্থান করবো। যাতে কোনো গাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি করতে না পারে।
এদিকে শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগসহ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতারা পৃথক বৈঠক করেন। মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন। এতে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী এবং শান্তি সমাবেশে সঞ্চালনা করবেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। এ ছাড়া বক্তব্য রাখবেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
কয়েকটি মৌখিক শর্তে সমাবেশের অনুমতি: ওদিকে গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজউদ্দিন রিয়াজ সমাবেশের অনুমতি নিতে পুলিশ কমিশনার গোলাম ফারুকের দপ্তরে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি মানবজমিনকে বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকটি মৌখিক শর্ত দিয়ে আওয়ামী লীগকে শান্তি সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে- কোনো ধাতব যন্ত্র আনা যাবে না, লাঠিসোটা আনা যাবে না, গাড়ি ভাঙচুর করা যাবে না, জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করা যাবে না, সন্ধ্যার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে।