জাবিতে দিনের আলোয় জঙ্গলে চলছে র্যাগিং
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছে নিয়মিত। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পিছনে সুন্দরবন নামক জঙ্গলে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছে নিয়মিত। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পিছনে সুন্দরবন নামক জঙ্গলে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ৫১তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং করছিল। প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে আসার কথা বুঝতে পেরে তারা চলে চলে যায়। পরে বিভাগে গিয়ে দুইজন নবীন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন প্রক্টরিয়াল টিম। শিক্ষার্থী দুইজন তখনো ভীত। একজনের চোখ লাল। ঠিকমতো কথা বলতে পারছে না। তারা র্যাগিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করলেও সিনিয়ররা যে তাদের জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছিল তা স্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৫১তম ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো তাদের র্যাগিং করা হয়। এ সময় তাদেরকে মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয়। ম্যানার শিখানোর নামে সিনিয়ররা তাদের গালিগালাজ করে। সিনিয়রদের সালাম না দেয়ায় শাসায়।
আমাদের একজনকে চেয়ার (র্যাগিং এর একটা অংশ) বানায়। আমরা দুপুরে খাওয়ার সময় পাইনি। এখন দুপুরে খালি পেটে ক্লাস করতে হবে। এ ব্যাপারে ৫০ ব্যাচের দুই ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ নাফিসা তাবাসসুম ও পারভেজ জানান, আমরা ওদের নিয়ে বসেছিলাম। কিছুদিন পর আমাদের বায়োটেক ক্লাবের একটা প্রোগ্রাম আছে সেটা নিয়ে কথা বলেছি। র্যাগিং এর তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। র্যাগিং এর ঘটনার বিষয়ে বিভাগের সভাপতি উম্মে সালমা যোহরা বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় একটু আগে বিভাগ থেকে চলে এসেছি। এখনো ঘটনা শুনিনি। এ ব্যাপারে জেনে, দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ ব্যাপারে সহকারী প্রক্টর ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রনি হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী প্রক্টর মনির শিকদার ও অনুপ মজুমদারসহ ঘটনাস্থলে আসি। এসে কাউকে পাইনি তবে খোঁজ পেয়েছি এ রকম একটি ঘটনা ঘটেছে।
তারা প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেছে। যখন ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছি মনে হয়েছে তারা ভীত সন্ত্রস্ত। কিন্তু তারা র্যাগিং এর বিষয়টি অস্বীকার করেছে, হয়তো ভয় পেয়ে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আমরা বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছি কিন্তু উনি না থাকায় বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শরিফ হোসাইন স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, শিক্ষার্থীদের কাউন্সেলিং করবেন এবং বিভাগে অন্যদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এর আগে ১২ই মার্চ এই জঙ্গলেই অর্থনীতি বিভাগের একদল শিক্ষার্থীর র্যাগিং সাদৃশ্য দৃশ্য দেখা যায়। তবে বিভাগের শিক্ষর্থীরা জানায়, অর্থনীতি বিভাগের ৪৯তম ও ৫০তম ব্যাচে পিকনিকের আলোচনা করতে তারা এই জঙ্গলে এসেছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: