গ্রিনল্যান্ডে ভূমিধসের প্রতিধ্বনি শোনা গেছে টানা ৯ দিন

গ্রিনল্যান্ডে ভূমিধসের প্রতিধ্বনি শোনা গেছে টানা ৯ দিন

প্রথম নিউজ, অনলাইন:  গ্রিনল্যান্ডের একটি সামুদ্রিক খাঁড়িতে বরফে মোড়ানো একটি ভয়াবহ ভূমিধসের প্রতিধ্বনি বিশ্বের নানা প্রান্তে টানা ৯ দিন পর্যন্ত শোনা গেছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। খাড়া পাহাড় থেকে বরফঘেরা ভূমিখণ্ডটি মহাসাগরে গড়িয়ে পড়েছিল গত বছর। এ সময় মহাসাগরে স্ট্যাচু অব লিবার্টির উচ্চতার (৩০৫ ফুট) সমান ঢেউ সৃষ্টি হয়, যা ৮০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে থামে। উপকূলে সৃষ্টি হয় পানির ভয়াবহ ঘূর্ণন।
এই ভূমিধসের কম্পাঙ্ক বিশ্বের সব এলাকায় ধরা পড়ে। আর টানা ৯ দিন ধরে বিশ্বের নানা প্রান্তে ভূকম্পনীয় ঘণ্টার মতো ভূমিধসের প্রতিধ্বনি শনাক্ত করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাতের মতো বেশির ভাগ ভূমিধসের সঙ্গে পরিবেশগত বিপর্যয়ের যোগসূত্র থাকে। ভূমিধসটি ঘটেছিল ২০২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর।
সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার সেন্সরগুলোতে একটি প্রবল ভূকম্পন সংকেত ধরা পড়ে। এসব সেন্সর শনাক্ত করতে সক্ষম হয়, গ্রিনল্যান্ডের পূর্ব উপকূলের একটি দুর্গম এলাকায় মহাসাগরে তীব্র আলোড়ন চলছে। সাধারণত ভূমিকম্প হলে সেন্সরগুলোতে এই ধরনের কম্পনের সংকেত মেলে। বড় ধরনের বিস্ফোরণ, সুনামি অথবা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতকালেও কম্পাঙ্ক শনাক্ত করা যায়।
পরদিন একদল পর্যটক মহাসাগরে জাহাজে ভ্রমণকালে দেখতে পান, গ্রিনল্যান্ডের ইলা দ্বীপের একটি পরিত্যক্ত রিসার্চ স্টেশন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং স্টেশনের বাইরে রাখা শিপিং কনটেইনার ও নৌকা মহাসাগরে ভাসছে। ইলা দ্বীপের ওপর দিয়ে ১৩ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস বয়ে যায়। অনেক উপকূলীয় এলাকার ফসল নষ্ট হয়। পরে স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভূমিধসের কারণে মহাসাগরে সৃষ্ট ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ১১০ মিটার (৩৬০ ফুট)। আর ভূখণ্ডটি মহাসাগরে পড়ার পর পানি ছিটকে যায় ৬৫০ ফুট দূর পর্যন্ত।
পরে সেখানে ঢেউয়ের পর ঢেউ তৈরি হতে থাকে এবং টানা ৯ দিন ভূমিধসের প্রতিধ্বনি শোনা যায়।

সূত্র : সায়েন্স ডেইলিডটকম