গৃহকর্মীকে নির্যাতন করায় পাইলট ও তার স্বামীকে গণপিটুনি
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে এক বিমানসংস্থার পাইলট এবং তার স্বামীকে গণপিটুনি দিয়েছে জনতা। ওই নারী পাইলটের স্বামীও একটি বিমান পরিষেবা সংস্থায় চাকরি করেন।
বুধবার সকাল ৯ টার দিকে নয়াদিল্লির পশ্চিমাঞ্চলীয় উপশহর দ্বারকায় ঘটেছে এই ঘটনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে জনতার হাতে বেধড়ক পিটুনির শিকার ওই দম্পতির ভিডিও।ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পাইলটের উর্দি পরা এক নারীকে ঘিরে ধরে অপর কয়েকজন নারী সমানে কিল-চড়-ঘুষি দিচ্ছেন। দু’একজনকে তার চুলের মুঠি ধরে পেটাতেও দেখা গেছে।
পিটুনির শিকার ওই নারী প্রথমে সাহায্যের জন্য চিৎকার করেন, পরে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষুব্ধ নারীদের উদ্দেশে ‘স্যরি’ও বলেন, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।
ওই পাইলটের থেকে কয়েক গজ দূরে তার স্বামীকে পিটুনি দিচ্ছিলেন ৬-৭ জন পুরুষ। তিনি তার স্ত্রীকে বাঁচাতে এগিয়েও গিয়েছিলেন, ঘিরে থাকা জনতার কারণে তা পারেননি তিনি।
শেষে পুলিশ সদস্যরা এই দুইজনকে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে দ্বারকায় নিয়ে আসেন।
দ্বারকার পুলিশ উপকমিশনার এম হর্ষবর্ধন জানান, দ্বারকার একটি আবাসিক ভবনের বাসিন্দা ও দম্পতির ফ্ল্যাটে সম্প্রতি গৃহকর্মীর কাজে যোগ দেয় ১০ বছরের একটি মেয়ে। কয়েক দিন আগে বাড়ি থেকে এক আত্মীয়কে তাকে দেখতে আসেন এবং মেয়েটির হাতে পায়ে ও গায়ে পোড়া ও ক্ষতচিহ্ন দেখতে পান।
ওই আত্মীয় মেয়েটিকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করার পর সে জানায়, তাকে নিয়মিত মারধর করেন ওই দম্পতি। এরপরই পুলিশে খবর দেন ওই আত্মীয়, সেই সঙ্গে খবর যায় ওই দম্পতি যে মহল্লায় থাকেন— সেখানেও।
পুলিশ আসার আগেই সকাল ৯টা নাগাদ অনেক লোকজন চলে আসেন দম্পতির বাড়ির সামনে। নীচে ডেকে পাঠানো হয় দম্পতিকে। তার পরেই শুরু হয় দম্পতিকে বেধড়ক মারধর।
উপকমিশনার এম হর্ষবর্ধন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি একটি ১০ বছরের নাবালিকাকে গৃহ পরিচারিকা হিসাবে রাখা হয়েছিল। মেডিক্যাল পরীক্ষায় মেয়েটির শরীরে একাধিক ক্ষত এবং পোড়ার দাগ শনাক্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা রুজু করা হয়েছে।’
‘আমরা স্বামী-স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়েটির কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’