চুক্তি সই: বাংলাদেশের কর্মী নিলে মালয়েশিয়াপ্রান্তের খরচ নিয়োগকর্তার
কর্মী নেওয়ার জন্য নতুন একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : দীর্ঘ তিন বছর পর বাংলাদেশ থেকে আবারও কর্মী নেওয়ার জন্য নতুন একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া।
রোববার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সমঝোতার আওতায় বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ায় নেওয়া, আবাসন, এবং দেশে ফেরত পাঠানোসহ মালয়েশিয়াপ্রান্তের যাবতীয় খরচ বহন করবেন নিয়োগকর্তা।
নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবে। মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, কোভিড পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত খরচসহ সব ধরনের ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করবে। ফলে আশা করা যায়, কর্মীর অভিবাসন খরচ অনেক কমে যাবে।”
এর আগে মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ২০১৬ সালে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছিল। পাঁচ বছর মেয়াদী ওই চুক্তির আওতায় লোক পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ১০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সিকে।
কিন্তু প্রবাসী এক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগসাজশে একটি চক্র ওই ১০ এজেন্সিকে নিয়ে সিন্ডিকেট করে শ্রমিকদের কাছ থেকে দুই বছরে ২০০ কোটি রিঙ্গিত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এরপর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে বাংলাদেশি কর্মীদের আর ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া। তবে আগে যারা ভিসা পেয়েছিলেন, তারা পরেও মালয়েশিয়া যাওয়ার সুযোগ পান।
করোনাভাইরাসের দাপট কমে এলে মালয়েশিয়া সরকার আবারও বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে সম্মত হয়।
এর মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন খাতে বহু বাংলাদেশি কর্মীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং প্রত্যাবাসনের একটি ‘আদর্শ কাঠামো’ তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
“উভয় দেশের আইন, বিধি, প্রবিধান, জাতীয় নীতি এবং নির্দেশাবলীর আলোকে এই সমঝোতা স্মারকে কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদাকে অধিকতর সুরক্ষিত করা হয়েছে।”
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, হাই কমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার এবং মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ খাইর আজমান বিন মোহামেদ আনুয়ার, বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলমসহ উভয় দেশের কর্মকর্তারা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মুনিরুছ সালেহীন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসেই আড়াই লক্ষাধিক কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে বিদেশে। এর মধ্যে গত নভেম্বর মাসে ১ লাখ ২ হাজার ৮৬৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন।
“আমাদের প্রত্যাশা, বিদেশ গমনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে এ অর্থবছরে সাত থেকে আট লাখ লোকের বিদেশে কর্মসংস্থান হবে।”
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: