আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে- নজরুল ইসলাম খান

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে-  নজরুল ইসলাম খান

প্রথম নিউজ, বগুড়া: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, একদফায় ছিল সরকার পতন ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। সরকার পতন হয়েছে, এখন নির্বাচন বাকি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। কেউ বলছেন দেশ সংস্কার, তারপর নির্বাচন। কেউ দল গোছাতে পারেনি, কেউ জোট করার চেষ্টায় আছে। তাই সংস্কার নিয়ে কথা বলছেন। আমরা বলতে চাই নির্বাচনের পরেও সংস্কার করা সম্ভব।  শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের সমন্বয়ে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, বিশেষ বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল আলম নয়ন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, তারুণ্যের জন্য তারেক রহমান কাজ করছেন। আজকের তারুণ্য বাংলাদেশকে অনেক দুর এগিয়ে নিয়ে যাবে। তরুণ বয়সে আমরাও রাজনীতি করেছি, কিন্তু আপনাদের মত সক্রিয় ধারণা আমাদের ছিল না। আমরা এত কষ্টও করি নাই, আপনারা যে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, আমরাও সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই সংগ্রাম করেছি। যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে, তা দূর না হয়। এদেশের কৃষক, নারী, ছাত্র সবশ্রেণির মানুষ যদি ন্যায্য সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে ২৪'র জুলাই আন্দোলন ব্যর্থ হবে। আন্দোলন ও লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তাই সকলকে সক্রিয় থাকতে হবে।

তিনি বলেন, বারবার আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন দেশ পেয়েছিলাম। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার জন্য। সেই বাকশালের অবসান ঘটিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। এদেশে আবারও ১/১১ এর মত সরকার গঠনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা কোন ষড়যন্ত্রকে ভয় পাই না। যে গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছিল তা ফিরিয়ে আনতে লড়াই করতে হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় জেলখানায় পাঠানো হয়েছিল। আমরা তখন থেকে লড়াই করে যাচ্ছি। এদেশের সবাইকে এক করে আন্দোলন ও রাজপথে রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদের মসনদ ভেঙে দেয়া হয়েছে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে। গণতন্ত্রের এই লড়াইতে বাংলাদেশের মানুষ একদফার দাবিতে লড়াই করেছে ফ্যাসিবাদের পতন ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে। একটা আদায় হয়েছে এখন আর একটা দরকার। তা হলো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। এটার দায়িত্ব যাদের দেয়া হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচিত সরকার নয়। তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব আছে, কিন্তু জনগণ স্থায়ী সরকার চায়। ১৭ বছরে ফ্যাসিবাদী সরকার ধ্বংস করেছে দেশের সকল কাঠামোকে। তারেক রহমান সবার পরামর্শ নিয়ে ৩১ দফা দিয়েছেন রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্য। আমরা সেই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে দেশকে পুনর্গঠন করব। দেশের মানুষকে নিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করা হবে।

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, আগামী ডিসেম্বর নির্বাচনের কথা বিএনপি বলেছে। অনেকে ডিসেম্বর নয় আরও সময় চায়। অনেকে দল গোছাতে পারেনি। অনেকে জোট করার চেষ্টায় আছে। অথচ তরুণদের একদফা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। তাই অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।

সমাবেশে বেলা ২টা থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মধ্যে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। বৃষ্টিভেজা শরীরে তরুণ সমাগমে সমাবেশে সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সমাবেশ শেষ হয়।