‘আমাকে মারি ফেলাইছে স্যার, ৩০ বছরের হায়াত ১০ বছরে আনছে’

ওই হাজতি নীলফামারী সদর উপজেলার পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের কিশামত মিলবাজার গ্রামের এস্তামুল হকের ছেলে।

‘আমাকে মারি ফেলাইছে স্যার, ৩০ বছরের হায়াত ১০ বছরে আনছে’

প্রথম নিউজ, নীলফামারী: নীলফামারী জেলা কারাগারে দুলাল হোসেন (৩২) নামে এক হাজতি আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা কারাগারের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। ওই হাজতি নীলফামারী সদর উপজেলার পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের কিশামত মিলবাজার গ্রামের এস্তামুল হকের ছেলে।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, দুলাল মাদক মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন। জমাদারের সঙ্গে টাকা নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে দুলাল আত্মহত্যা করবেন বলে জানান। এরপর ব্লেড দিয়ে গলায় পোঁচ দেন। পরে তাকে কারা পুলিশের সহযোগিতায় রাত আড়াইটার দিকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।

আজ শুক্রবার (৭ জুলাই) সকালে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন দুলাল বলেন, ‘জেলখানায় অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। আমাকে মারি ফেলাইছে স্যার। জেলার যেভাবে টর্চার করছে, আমার ৩০ বছরের হায়াত ১০ বছরে আনছে স্যার। জেলখানায় কোনো আইন নাই।’

তিনি বলেন, ‘নীলফামারী হাসপাতালে চিকিৎসা হলে হবে আমি রংপুরে যাব না। শত চেষ্টা করে আমাকে নিতে পারবে না। তাহলে আমার লাশ বের হবে। কয়টা ব্লেড দিবেন দেন। জেলা পুলিশ সুপার না আসা পর্যন্ত আমি এখান থেকে কোথাও যাব না।’

নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে দ্রুত পুলিশ পাঠিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। পরে তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সে একজন মাদক মামলার আসামি।

এ বিষয়ে জেলার আবু নূর মো. রেজা হাজতির সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে কোনো টর্চার করা হয়নি। তার দেওয়া তথ্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এই মামলায় তার জামিন হয়েছিল কিন্তু আদালতে সে সিনক্রিয়েট করায় আদালত তার জামিন বাতিল করে জেলা কারাগারে পাঠায়। তার নামে অনেক মামলা ছিল। বর্তমানে মাদক মামলায় কারাগারে রয়েছে।