সিলেটে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতে ট্রাভেলস মালিকের বিরুদ্ধে মামলা

মামলায় সিলেট নগরের জিন্দাবাজারের ট্রাভেলসটির মালিক আমিনুর রহমান এবং তার দুই ভাই ছিদ্দিকুর রহমান ও জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে।

সিলেটে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতে ট্রাভেলস মালিকের বিরুদ্ধে মামলা
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, সিলেট: সিলেটে তিন শতাধিক বিদেশ গমনেচ্ছু সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মামলা হয়েছে। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আমিন রহমান ট্রাভেলসের তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলাটি করেন ফখরুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী।

মামলায় সিলেট নগরের জিন্দাবাজারের ট্রাভেলসটির মালিক আমিনুর রহমান এবং তার দুই ভাই ছিদ্দিকুর রহমান ও জিয়াউর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, রোমানিয়া পাঠানোর নামে সহজ-সরল লোকদের কাছ থেকে আসামিরা মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করেন।

আমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রোমানিয়া পাঠানোর নাম করে অন্তত ৩০০ জনের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। টাকা নিলেও কাউকে ভিসা দেননি। উল্টো অনেকের পাসপোর্টে রোমানিয়ার জাল ভিসা লাগিয়ে প্রতারণা করেছেন। নগরীর জিন্দবাজার এলাকার হক সুপার মার্কেটের আমিন ট্রাভেলসে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তালাবন্ধ দেখা গেছে। প্রতিবেশী ব্যবসায়ীরা জানান, শনিবারও প্রতিষ্ঠানটি খোলা ছিল। এ দিন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী বিক্ষোভ করেছেন।

ওই এজেন্সিতে টাকা দেওয়া একাধিক যুবক জানান, চার মাস আগে রোমানিয়ায় পাঠানোর কথা বলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় ‘আমিন রহমান ট্রাভেলস’। বিজ্ঞাপনে লেখা হয়, রোমানিয়ায় যেতে হলে ছয় লাখ টাকা লাগবে। প্রথমে বুকিং মানি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা ও ওয়ার্ক পারমিট আসার পর দিতে হবে আরও ৫০ হাজার টাকা। বাকি পাঁচ লাখ দিতে হবে ভিসা হওয়ার পর। এ বিজ্ঞাপন দেখে রোমানিয়ায় যেতে আগ্রহীরা লিখিত চুক্তি করে আমিন ট্রাভেলসকে টাকা দেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রথমে ৫০ হাজার ও ওয়ার্ক পারমিট আসার কথা বলে আরও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। পরে ভিসা হয়ে যাওয়ার কথা বলে পুরো টাকাও নেওয়া হয়েছে আরও কয়েক শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে।

মামলার বাদী দক্ষিণ সুরমার বলদি এলাকার ফখরুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে আমিন রহমান আমাকে ভিসা হয়ে গেছে বলে জানান। পরে আমি তাকে ছয় লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর থেকেই তার খোঁজ মিলছে না। পাসপোর্টও ফেরত দিচ্ছেন না। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রুহুল আমিন রোমানিয়া যাওয়ার জন্য এই ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন তিনি। ট্রাভেল এজেন্সিও চুক্তি অনুযায়ী রুহুলের পাসপোর্টে রোমানিয়ার ভিসা লাগিয়ে দেয়। এ পর্যন্ত ঠিকঠাকই ছিল।

কিন্তু বিপত্তি বাধে যখন রুহুল আমিন পরিচিত একজনের মাধ্যমে ভারতে রোমানিয়া দূতাবাসে ভিসার কপি যাচাই করতে পাঠান। দূতাবাস থেকে জানানো হয়, রুহুলের পাসপোর্টে লাগানো ভিসাটি জাল। জয়া হাসান নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, আমরা দুজন মিলে তাকে ছয় লাখ টাকা দিয়েছিলেম। ২৪ তারিখে আমার ফ্লাইট হওয়ার কথা ছিল। ফ্লাইটের কথা বলে আমাদের ঢাকায়ও নিয়ে গিয়েছিলেন আমিন রহমান। কিন্তু ঢাকা যাওয়ার পর থেকে আর তার খোঁজ মিলছে না। এ বিষয় সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom