Ad0111

৪৫ হাজার টাকার সরকারি গাছ ৯ হাজারে বিক্রি করে দিলেন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান

আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী আবু শাদাত মোহাম্মদ সায়েম

৪৫ হাজার টাকার সরকারি গাছ ৯ হাজারে বিক্রি করে দিলেন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান
বিএমডিএ এর সরকারি গাছ

প্রথম নিউজ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাস্তার ধারে থাকা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের সরজন জোড় পাইকড়তলা মোড়ের ৩টি কড়ইগাছের কাঠ ও খড়ি বিক্রি করেছেন তারা।

গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আসজাদুর রহমান মান্নু মিয়ার নির্দেশে ১ নং ওয়ার্ড সদস্য মশিউর রহমান সান্তাজুল এসব গাছের কাঠ ও খড়ি বিক্রি করেন। কাঠ ব্যবসায়ী একই ইউনিয়নের সরজন গ্রামের কবির আলী এগুলো কিনে নেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কাঠ ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রায় ৪ দশকের বেশি বয়সী ৩টি কড়ইগাছের মোটা ডাল ও খড়ির বাজারমূল্য অন্তত ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। বিএমডিএর কোনো রকম অনুমতি বা যোগাযোগ ছাড়াই এসব কাঠ ও খড়ি পানির দামে মাত্র সাড়ে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন ইউপি সদস্য।

স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, গত ১০ দিন আগে পল্লী বিদুৎ সমিতির কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে গাছগুলো কেটে রেখে যান। এরপর রাস্তার ধারেই পড়ে ছিল গাছের ডালপালাগুলো। পরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে ইউপি সদস্য মশিউর রহমান সান্তাজুল সেগুলো বিক্রি করেন।

ঘটনা জানতে পেরে ইতোমধ্যে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিএমডিএ কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। রাস্তার ধারের গাছগুলোর মালিকানা বিএমডিএর আওতাধীন বলে নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিএমডিএ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম।

ক্রেতা কবির আলী বলেন, কার গাছ বা গাছের মালিক কে, এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন গাছগুলো কেটে রেখে যাওয়ার পর চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে মেম্বার আমার কাছে বিক্রি করেছেন। প্রথম দিনে একটি গাছের ৪৪ মণ খড়ি পাঠিয়েছি। বাকি খড়ি ও কাঠ পড়ে আছে।

কবির আলী নিয়োজিত এক শ্রমিক বলেন, প্রথম দিন বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনের উপস্থিতিতে গাছগুলো আমরাই কেটেছিলাম। পরে কয়েক দিন পড়ে থাকার পর মেম্বার-চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমাদের মহাজন গাছগুলো কিনে নিয়েছেন। রাস্তার ধারের গাছগুলো কার, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, গাছগুলো সরকারি, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু চেয়ারম্যান-মেম্বারের থেকে কিনে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ গরিবুল্লাহ বলেন, কয়েক দিন আগে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা গাছগুলো এসে কেটেছেন। শুনলাম কারেন্টের তারের নাকি অসুবিধা হচ্ছিল। কয়েক দিন পড়ে ছিল গাছগুলো। গতকাল (সোমবার) থেকে শ্রমিকরা গাছগুলো কাটা শুরু করেছেন। তাদের জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, তারা নাকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছ থেকে গাছগুলো কিনে নিয়েছে।

গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মশিউর রহমান সান্তাজুল বলেন, আমি সরকারি লোক। সরকারি গাছ কেটেছি। যার যা ইচ্ছে করবে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেই গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আসজাদুর রহমান মান্নু মিয়া বলেন, বিএমডিএর গাছগুলো আমরা বিক্রি করেছি। সেখান থেকে যা অর্থ আসবে, ইউনিয়ন পরিষদের কোষাগারে জমা করা হবে। বিএমডিএর অনুমোদন নিয়ে বিক্রি করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি গাছ বিক্রি করেছি। এতে আমার নামে মামলা হলে আদালতে মোকাবিলা করব।

বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী আবু শাদাত মোহাম্মদ সায়েম বলেন, গাছগুলো বিএমডিএর। বৈদ্যুতিক তার সংযোগ দেওয়ার জন্য গাছগুলো কাটা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ বা কোনো অনুমতি ছাড়াই পড়ে থাকা গাছগুলো বিক্রি করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news