৪০ বছর পর তুরস্ক যাচ্ছে লিবিয়ার যাত্রীবাহী জাহাজ
চার দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো লিবিয়ার মিসরাতা বন্দর থেকে তুরস্কের ইজমির প্রদেশের উদ্দেশে একটি যাত্রীবাহী জাহাজ ছেড়ে গেছে

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : চার দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো লিবিয়ার মিসরাতা বন্দর থেকে তুরস্কের ইজমির প্রদেশের উদ্দেশে একটি যাত্রীবাহী জাহাজ ছেড়ে গেছে।বুধবার এটি যাত্রা শুরু করে। খবর ডেইলি সাবাহর।
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে লিবিয়ায় কোনো আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল করেনি। ২০১১ সালে একনায়ক মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর দেশটিতে পর্যটন খাত ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া গাদ্দাফির শাসনামলে ১৯৬৯ সাল থেকে লিবিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। এর কারণে পর্যটকদের জন্য লিবিয়ার দুয়ার এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়।
তুরস্কের সঙ্গে যাত্রীবাহী এ জাহাজ চালু করেছে লিবিয়ার প্রতিষ্ঠান কেভালে। এটি তুরস্কে পৌঁছাতে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে। এ জাহাজ আবার ফিরে আসবে ৭ ডিসেম্বর। মিসরাতা বন্দরের কর্মকর্তা তাহা হাদিদ বলেন, মিসর ও তিউনিসিয়ায় এ ধরনের সেবা চালুর বিষয়ে আমাদের চুক্তি রয়েছে। মিসরাতা লিবিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর। এটি দেশটির রাজধানী ত্রিপোলি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যেখানে তুরস্কের অসংখ্য ব্যবসায়ী বাস করেন।
লিবিয়ায় বিমান সেবাও ধীরে ধীরে চালু হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে গৃহযুদ্ধে বিমানবন্দর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বহু রুটে ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে ২০২০ সালে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে তুরস্কের সহায়তায় কিছু কিছু ফ্লাইট পুনরায় চালু হয়েছে।
২০১১ সালে আরব বসন্তের প্রভাবে বিক্ষোভ ও গৃহযুদ্ধে লিবিয়ার দীর্ঘকালীন শাসক মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফির পদচ্যুতি ও নিহত হওয়ার পর দেশটি দু’পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ে। জাতিসংঘ স্বীকৃত লিবিয়ার সরকার রাজধানী ত্রিপোলিসহ দেশটির পশ্চিমাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে। অন্যদিকে বেনগাজিকে কেন্দ্র করে মিসর, জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমর্থিত বিদ্রোহী জেনারেল খলিফা হাফতারের বাহিনী দেশটির পূর্বাঞ্চলের দখল নেয়।
এদিকে পররাষ্ট্রনীতিতে তুরস্ক গত বছরের জানুয়ারিতে লিবিয়ার সঙ্গে ভূমধ্যসাগরে জলসীমা চুক্তি করে। লিবিয়ার সাথে ওই চুক্তির পর তুরস্ক সামরিক শক্তি দিয়ে লিবিয়ার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের পাশে দাঁড়ায়। দেশটির প্রায় ৮০ ভাগ দখলকারী, এমনকি রাজধানী ত্রিপোলির উপকণ্ঠ পর্যন্ত ত্রাস ছড়ানো খলিফা হাফতারের বাহিনীকে পিছু হটাতে বাধ্য করেছে তুরস্ক। মরুর বুকে তুরস্কের সামরিক শক্তির উত্থান দেখেছে বিশ্ব। ত্রিপোলি ভিত্তিক বৈধ সরকারকে হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে সাহায্য করেছে।
লিবিয়ার সঙ্গে এই চুক্তির বলেই তুরস্ক নৌবাহিনী দাবিয়ে বেড়িয়েছে ভূমধ্যসাগরে। তুরস্ক আরও দৃঢ় ভাবে ভূমধ্যসাগরে নিজের অবস্থানের জানান দিতে পেরেছে। গ্রিস, ইসরাইল, মিসর, সিরিয়া এক হয়ে ভূমধ্যসাগরে তুরস্ককে যে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা করছিল তা ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: