হেরেই গেল শান্তরা

গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারায় জিম্বাবুয়ে।

হেরেই গেল শান্তরা

প্রথম নিউজ, খেলা ডেস্ক: সকালে ম্যাচ, টস জিতে যেকোনো অধিনায়কই  বেশির ভাগ সময় আগে বোলিং নিবেন। গতকাল জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজাও সেই পথেই হাঁটলেন। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং অর্ডারে ধস নামে বাংলাদেশের। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নাজমুল হোসেন শান্ত সেই চাপ সামলালেও শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহ পায়নি বাংলাদেশ। এরপর রাজা ও ব্রায়ান বেনেটের ব্যাটে চড়ে সহজেই সেটা  টপকে যায় জিম্বাবুয়ে। আগের দুই ম্যাচে হারের শঙ্কা জাগিয়ে জয় পাওয়া শান্তর দল এবার আর পারেনি।

গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারায় জিম্বাবুয়ে। ৫ ম্যাচের সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে রিয়াদের ফিফটিতে ৬ উইকেটে ১৫৭ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৯ বল হাতে রেখেই জয় পায় সফরকারীরা। যদিও টানা ৪ ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ৭০ রান ও ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন বেনেট।

আর চোটের কারণে গতকাল ম্যাচ না খেলা তাসকিন আহমেদ ৮ উইকেট নিয়ে হন সিরিজ সেরা। লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং উপহার দেন বেনেট। শেখ মেহেদীর করা প্রথম দুই ওভারে ৩ চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান তিনি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আরেক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে ফিরিয়ে ৩৮ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। জুটিতে তার অবদান ছিল মাত্র ১ রান। এরপর রানের গতি কিছুটা কমে আসে। ১০ ওভার শেষে ১ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ছিল ৬২ রান। এরপর রাজা ও বেনেট মিলে রানের গতি বাড়ানো শুরু করেন। ৩৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন বেনেট। রাজা শুরুতে কিছুটা সময় নিলেও খোলস ছেড়ে বের হন দ্রুতই। সাইফউদ্দিনের করা অষ্টম ওভারে হাঁকান এক চার ও এক ছক্কা। এরপর রিশাদের করা ১১তম ওভারে ছক্কা মারেন দুজনই। অন্য বোলাররা সুবিধা না করতে পারলেও সাকিব বল হাতে ছিলেন অনবদ্য।

তার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররাও ঝুঁকি নেননি। ৪ ওভারে ৯ রান খরচায় ১ উইকেট নেন তিনি, ১৪ ওভারের মধ্যেই তার বোলিংয়ের কোটা শেষ করে ফেলেন অধিনায়ক শান্ত। ১৬তম ওভারে বেনেটকে ফিরিয়ে ৭৫ রানের জুটি ভাঙেন সাইফউদ্দিন। ফেরার আগে ৪৯ বলে সমান ৫টি চার ও ছক্কায় ৭০ রান করেন বেনেট। শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ে প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। ১৮তম ওভার করতে আসা সাইফুদ্দিনকে ২ ছক্কা ও ১ চার মেরে দলকে জয়ের আরও কাছে পৌঁছে দেন রাজা। পরের ওভারে ২ বলে ৫ রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন জনাথন ক্যাম্পবেল। ৪১ বলে ফিফটি করা রাজা অপরাজিত থাকেন ৪৬ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭২ রানে।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫ রানেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। একে একে ফিরে যান সৌম্য সরকার, তানজীদ হাসান তামিম ও তাওহীদ হৃদয়। পুরো সিরিজে চতুর্থবারের মতো টপ অর্ডার ফিরলো পাওয়ার প্লের মধ্যে। বিশ্বকাপের আগে টপ অর্ডার ব্যাটিংটা আরেকটু ঝালিয়ে নিতে পারলে ভালো হতো বলে জানান অধিনায়ক শান্ত। তিনি বলেন, ‘টপ অর্ডারে যদি আরেকটু ভালো ব্যাটিং করতে পারি, তাহলে ভালো হবে। ভালো শুরু দিতে পারলে ভালো হবে।’ ইনিংসের পঞ্চম ওভারে উইকেটে আসেন রিয়াদ।

ওই ওভারে টানা ৩টি চার মারেন তিনি। অধিনায়ক শান্ত তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন। দুজনের জুটিতে ম্যাচে ফিরতে শুরু করে টাইগাররা। শুরুতে কিছুটা অস্বস্তিতে থাকলেও অষ্টম ওভারে ফারাজ আকরামকে তিন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে খোলস ছেড়ে বের হন শান্ত। কিন্তু এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি তিনি। স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাদাকাদজাকে ছক্কা মারার পরে আবার উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এর আগে ২৮ বলে ৩৭ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। 

এরপর দ্রুত গতিতে রান তোলার চেষ্টা করলেও পেরে ওঠেননি রিয়াদ। উইকেটে এসে ব্যর্থ হন সাকিবও। দলীয় ১৭তম ওভারে ১৭ বলে ২১ রান করে ফেরেন তিনি।  ৩৬ বলে ফিফটি করা রিয়াদও শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি। পরের ওভারে উইকেট দেয়া রিয়াদ করেন ৪৪ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৫৪ রান। শেষদিকে জাকের আলীর ১১ বলে ২৪ রানের ক্যামিওতে টাইগারদের দলীয় সংগ্রহ দেড়শ পার হয়।