সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়াতে চান মিল মালিকরা

ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানিকারক ও মিল মালিকদের সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বৈঠকে এসব কথা বলা হয়। এ সময় মিল মালিকরা সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয়ের (বাড়ানো) অনুরোধ জানান।

সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়াতে চান মিল মালিকরা
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: লিটারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ২৫ টাকা। তারপরও লোকসানের মুখে পড়ছেন। এমনটাই দাবি করছেন মিল মালিকরা। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম বেড়েছে- এমন অজুহাতে দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়াতে চান আমদানিকারক ও উৎপাদনকারীরা।

বুধবার ( ৬ এপ্রিল) ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানিকারক ও মিল মালিকদের সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বৈঠকে এসব কথা বলা হয়। এ সময় মিল মালিকরা সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয়ের (বাড়ানো) অনুরোধ জানান।

বৈঠকে সিটি, মেঘনা, এস আলম, বসুন্ধরা ও টি কে গ্রুপের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে ভোজ্যতেলের বাজার সমন্বয় করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানান। দ্রুত সময়ে সমন্বয় না হলে বাজারে আবারও সমস্যা তৈরি হবে বলে জানান তারা।

মিল মালিকদের দাবি, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম বেড়েছে। সরকার যে সময়ে ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়, তখন প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম ছিল এক হাজার ৪০৭ মার্কিন ডলার। তবে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে এক হাজার ৮৮০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। ফলে সরকার ভ্যাট প্রত্যাহার করলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করায় তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।

দেশে দৈনিক পাঁচ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর জোগান হিসেবে পর্যাপ্ত মজুত মিল মালিকদের কাছে আছে বলেও জানান তারা। তবে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঈদের পর মে মাসে এ দাম সমন্বয় নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে অধিদপ্তর।

বৈঠকে মিল মালিক ও আমদানিকারকদের দাবির মুখে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে অন্যান্য সব ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে। ফলে নতুন আমদানিতে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ ক্ষেত্রে প্রতি লিটার তেলে ২০ টাকা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরও আন্তর্জাতিক বাজার পর্যালোচনা করে ঈদুল ফিতরের পর সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বয় সভা হবে। সেখানে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

আলোচনায় অংশ নেন ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। পরে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, দেশের মিলগুলোতে ভোজ্যতেলের মজুত স্বাভাবিক রয়েছে। তারা সরকারের নির্ধারিত দামে বাজারে তেল সরবরাহ করছে। তবে পাইকারি ও ডিলার পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা যোগসাজশ করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা করছে। ফলে এবার পাইকারি ও ডিলার পর্যায়ে বাজার তদারকিতে নামবে সংস্থাটি।

এতে আরও জানানো হয়, সয়াবিন তেল ও পাম অয়েলের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিদপ্তর বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়। এসব পদক্ষেপে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ বিক্রয় আদেশের (এসও) ১৫ দিনের মধ্যেই মিল থেকে ভোজ্যতেল সরবরাহ করেছেন মিল মালিকরা। তবে মাঠ পর্যায়ে ডিলারদের একটি সিন্ডিকেট আছে। সেটা ভাঙতে ইতোমধ্যে সব জেলা প্রশাসকের কাছে ডিলারদের তালিকা পৌঁছানো হয়েছে। ঢাকার মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে ভোক্তা অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমদানিকারকরা আশ্বস্ত করেছেন, সরকারের নির্ধারিত দাম ও নির্ধারিত সময়ে বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহ ঠিক রাখবেন। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে এবং ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। মিল মালিক বা পরিবেশকদের মধ্যে এখন কোনো সমস্যা নেই।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom