সরকারী ধর্মঘটে খুলনা মহানগরীর জমায়েত ঠেকাতে পারেনি: রিজভী

আজ রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারী ধর্মঘটে  খুলনা মহানগরীর জমায়েত ঠেকাতে পারেনি: রিজভী

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকারী ধর্মঘটে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেও খুলনা মহানগরীর জমায়েত ঠেকাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ রবিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গতকাল খুলনার গণসমাবেশ ছিল এক অনবদ্য, স্বত:স্ফুর্ত বিশাল জনসমাগম। জনসমাবেশকে বানচাল করতে সরকারী সকল উদ্যোগ ব্যর্থ করে দিয়ে রাত জেগে খুলনা মহানগরীর রাস্তাঘাট, ফুটপাথ ও সমাবেশ স্থলে শুয়ে বসে অবস্থান নেয় হাজার হাজার জনতা। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোষ্ট, ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলার শিকার হয়েও মানুষের ¯্রােতকে ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে শাসকগোষ্ঠী। সরকারী ধর্মঘটে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেও খুলনা মহানগরীর জমায়েত ঠেকাতে পারেনি। গণসমাবেশের পরে জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা বাড়ীতে ফেরার পথেও আওয়ামী দুস্কৃতিকারিদের হামলার মুখে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে। খুলনায় বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগ করেছে, যানবাহন ট্রলারে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নজীরবিহীন সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়েছে। তারা চেষ্টা করেছে জনগণের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করতে। শুধু পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের যৌথ আক্রমণই নয়, তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
তিনি বলেন, মহাসমাবেশ থেকে ফেরার পথে খুলনা মহানগরীর বৈকালীর মোড়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নারকীয় হামলার শিকার হন জিয়া পরিষদের সহকারী মহাসচিব এ্যাডভোকেট মর্তুজা উল আজম পিটার, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ, বিএনপি নেতা বকুল হোসেন। সেখানে তাদের ৪০টির মতো গাড়ী ভাংচুর করে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীসহ সংগঠনের ১০/১২ জন নেতাকর্মীকে বহনকারী মাইক্রোবাস পুলিশ বাধা দিয়ে আটকায় এবং জিলানী ছাড়া সবাইকে (গাড়ীর চালকসহ) গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। আজ তাদের জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আওয়ামী শাসনে গণতন্ত্র নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। শুরু হয় মহাপ্রতাপশালী আওয়ামী দুঃশাসন। এরা কোনদিনই বিরোধী দলকে বরদাশ্ত করেনি। কারণ তারা জনগণকে ভয় পায়। মূলত: আওয়ামী লীগ ভয় পেয়ে গেছে। এ কারণেই বিএনপির সমাবেশকে পন্ড করার জন্য দুর্বৃত্তদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তারা। যে সরকার বিরোধী মতের ওপর কঠোর অবস্থান এবং গুম ও ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সেই সরকার কখনোই বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকেও মেনে নিতে পারে না। খুলনার মহাসমাবেশকে ঘিরে শুধু হামলা আর আক্রমণই নয়, ছিনতাই-আটক ও অর্থ আদায়সহ নানা ধরণের অপরাধ করেছে সমাবেশে আগত জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর। এরা বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ণের যে ধারাবাহিকতা রেখেছে সেখান থেকে সরে আসেনি। যুবলীগ-ছাত্রলীগের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও হত্যায় উৎসাহী। আপনারা জানেন সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ চলাকালে যুবদলের নেতা শাওনকে অটোমেটিক চাইনিজ রাইফেল দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন, ‘বিএনপি লাশ চায়’। তাহলে ভোলা, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জে এতগুলো লাশ পড়লো, এটি কার দ্বারা সৃষ্ট ? আসলে ওবায়দুল কাদের সাহেবের ভীমরতি ধরেছে। তাদের রক্তমাখা হাত লুকোতে না পেরে হাস্যকর উদ্ভট কথা বলছেন অনর্গল। কারণ তারা জানেন, তারা টিকে থাকলে ভোট-নির্বাচনের দরকার হয় না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাকি খুলনায় বাস কেন বন্ধ তা তিনি জানেন না। তাহলে তিনি শুধু ব্যর্থই নন, অপদার্থও বটে। তিনি নিশ্চয়ই জানেন, বাস কে বন্ধ করেছে ? হাসিনার বরকন্দাজ হয়ে তিনি যে বাস বন্ধের কাজটি করেছেন, সেটি আসাদুজ্জামান খান কামাল না জানলেও দেশবাসী জানেন। তাদের নোংরা চাতুরী ও দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে জনগণের অভ্যুত্থান থামানো যাবে না। কুৎসা, মিথ্যা ও বেপরোয়া মিথ্যাচারের ন্যাক্কারজনক প্রচার চালাতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা এখন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ ও আসাদুজ্জামান খান কামাল’রা ফ্যাসিবাদের নি:স্বার্থ নিবেদিত উপাসক। এরা অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা, হিংসা ও হত্যায় উদ্বুদ্ধ আওয়ামী নাৎসীবাদের সৈনিক। নুরেমবার্গ ট্রায়ালের মতোই এদেরও একদিন বিচার হবে।   

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom