Ad0111

স্যার, আমি ডিফেন্স জার্নাল বের করতে যাচ্ছি

স্যার, আমি ডিফেন্স জার্নাল বের করতে যাচ্ছি
প্রথম নিউজ, ঢাকা: বড় ভাই পাকিস্তানের সিতারা ই জুরাত, ছোট ভাই বাংলাদেশের বীর প্রতীক: মেজর জেনারেল জামিল ডি আহসানের কথা। তিনি শুধু জেনারেলই নন,একজন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। আর তাঁর বড় ভাই পাকিস্তান বিমান বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত অফিসার। একই পরিবারের দুই ভাই দুই দেশের বীর; একজন বাংলাদেশের বীর প্রতীক, অপরজন পাকিস্তানের সিতারা ই জুরাত। এমন যোদ্ধা, বীর সমৃদ্ধ পরিবার ক’টি আছে?
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেই বীর প্রতীক মুক্তিযোদ্ধার নাম মেজর জেনারেল জামিল ডি আহসান। তাঁর বড় ভাই মরহুম ফ্লাইট লেফটেনেন্ট জিয়াউদ্দিন আহসান,এস জে। তিনি ওই পদক লাভ করেন ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে ফ্লাইং অফিসার থাকাকালীন অসম সাহসের জন্য । দু:খজনক হলো ১৯৭১ সালের মার্চের শুরুতে এক বিমান দুর্ঘটনায় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট জিয়া করাচিতে নিহত হন। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার কিছুদিন পরই তাঁর ছোট ভাই জামিল ডি আহসান তাঁর মা’র কাছে অনুমতি চান মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার। বড় ছেলে হারানোর শোকে ম্যুহমান মা সেই অনুমতি দিয়েছিলেন হাসিমুখে।
এমন একটি পরিবারের জীবন্ত কিংবদন্তি মেজর জেনারেল জামিল ডি আহসানকে দেখলে যে কারো প্রথমে মনে হবে তিনি খুব ভদ্র মানুষ, তিনি আসলেও তাই।আকার, আকৃতিতে গড়পড়তা বাঙ্গালিদের মতোই। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি কখনোই ভদ্র ছিলেন না। সেখানে তিনি ছিলেন বাঘ। পার্বত্য চট্টগ্রামেও তিনি অসম সাহসিকতার সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়েছেন।চাকুরি জীবনে এস এস এফ-এর মহাপরিচালক, কুমিল্লায় অবস্থিত ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ছিলেন।
জেনারেল জামিল স্যারের সাথে সামনা সামনি পরিচয় তাঁর একজন প্রাক্তন ইউনিট অফিসার নবম বিএমএ লং কোর্সের মেজর জামানের মাধ্যমে। সোজা স্যারের ঢাকা সেনানিবাসের বাসায়। ভয়ে ভয়ে গেলাম। ওমা! স্যার ও ভাবী তো দেখি মাটির মানুষ। প্রথম পরিচয়েই ভাবী কোরআনের কিছু দোয়া পড়ার উপদেশ দিলেন আমার মতো অধার্মিককে। স্যারও তা সমর্থন করলেন। মুক্তিযুদ্ধ তো বটেই তাঁর বড় ভাইয়ের ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে অংশ নেয়া, মৃত্যু ইত্যাদি নিয়েও বহু কথা হলো।ভাবী নিজ হাতে নাশতা তুলে দিলেন। অভিভুত হলাম। তাঁর ও ভাবীর সবাইকে আপন করে নেয়ার অভাবনীন গুন দেখে চমৎকৃত হলাম।
এরপরের কাহিনী গাড়ি কেনা নিয়ে! ২০০৪ সালে একটা নতুন গাড়ি কিনবো। এবি ব্যাংকের গুলশান শাখায় গেলাম। ফর্ম নিয়ে দেখি একজন গ্যারান্টর লাগবে। কোন কিছু না ভেবেই পরদিন সকালে জেনারেল জামিলকে ফোন করলাম। স্যার তখন সেনা সদর দপ্তরে এমজিও-মাস্টার জেনারেল অফ অর্ডন্যান্স। কি জন্য আসবো তা জানতে চাইলেন না, বলে দিলেন বারোটার দিকে চলে এসো।কাটায় কাটায় বারোটায় তাঁর অফিসে গিয়ে দেখি স্যার নেই। জি-২ জনৈক মেজর সাহেব আমাকে বসতে বললেন। কিছুক্ষণ পর স্যার এলেন। তাঁর পিছু পিছু অফিস রুমে গিয়ে ঢুকলাম। দেখি তাঁর হাতে কয়েকটি ফাইল। মেজাজ খারাপ। ফাইলগুলো ধপাস করে টেবিলে রাখলেন। তিনি সেনাপ্রধানের অফিসে গিয়েছিলেন ট্যাংক কেনা সংক্রান্ত ওই ফাইলগুলো নিয়ে। কাজ হয়নি। তাই তাঁর মেজাজ চড়ে গেছে। তিনি বহু খেটেছেন দ্রুত ট্যাংক সংগ্রহের জন্য। যাহোক, আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কি জন্য দেখা করতে চেয়েছি?
গাড়ির লোনের ফর্মটা তাঁর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম- স্যার, গাড়ি কিনবো, আপনার একটা সই দরকার।
আচ্ছা দেও। সই করে দিলেন। কতো টাকার লোন, কি গাড়ি,কতোদিনের জন্য কিছুই জিজ্ঞেস করলেন না। স্টাফকে ডেকে বললেন সিল ছাপ্পর মেরে দিতে।
চা খেয়ে স্বাক্ষর করা ফর্ম নিয়ে দৌড় দিলাম এবি ব্যাংকে। ম্যানেজারের চোখ বড় হয়ে গেল। তিনি বললেন- একটা গাড়ি কেনার জন্য আপনি এতো বিখ্যাত একজন মুক্তিযোদ্ধা জেনারেলের কাছে গেছেন তাঁকে গ্যারান্টর বানানোর জন্য!
পরদিন সকালে ব্যাংক থেকে ফোন। গ্যারান্টরের নাকি আরেকটি সই লাগবে আরেক জায়গায়। কি করি? ভয়ে ভয়ে জেনারেল জামিল স্যারকে আবার ফোন করলাম। তিনি মৃদু স্বরে বললেন- বাসায় চলে আসো সন্ধ্যার পর। গেলাম। নাশতা খাইয়ে বহুক্ষণ এটা ওটা আলাপ করে খসখস করে সই করে দিলেন নির্ধারিত জায়গায়!ভাবী আরো কয়েকটা দোয়া দরুদের মাসালা দিলেন।ওটা বাড়তি প্রাপ্তি!
ক’দিন পরই হাতে পেলাম নতুন গাড়ি।
এই হলেন জেনারেল জামিল ডি আহসান।
এরপর ২০০৮ সালের প্রথম দিকে আবার স্যারের কাছে গেলাম তাঁর মহাখালি ডিওএইচএস-এর বাসায়। ততোদিনে তিনি অবসরে গিয়েছেন লিবিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে। ২০০৫ সালে সেনাপ্রধান হওয়ার তালিকায় তাঁর নাম উপরের দিকে থাকলেও সাত জনকে ডিঙ্গিয়ে জেনারেল মইনকে সেনাপ্রধান করে জে. জামিলকে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এবার কি? স্যারের সস্নেহ প্রশ্ন।
স্যার, আমি ডিফেন্স জার্নাল বের করতে যাচ্ছি। আপনাকে ওটার উপদেষ্টা হতে হবে।
ঠিক আছে। কোন অসুবিধা নেই।উপদেশ তো আর কি দিবো?
যৎকিঞ্চিত দিলেই চলবে স্যার। জেনারেল জামিল উপদেষ্টা হয়ে গেলেন আমার সম্পাদিত জার্নালের।
এরপর থেকে ১৪ বছর হতে চললো স্যারকে শুধু বলি আর বলি তাঁর ও তাঁর বড় ভাইয়ের উপর একটা লেখা দিতে। দেশে এমন পরিবার তো নেই। দুই দেশের দুই বীর! স্যার মুক্তিযুদ্ধের উপর ইন্টারভিউ দিয়েছেন। কিন্তু সেই লেখা এখনো দিতে পারেননি। আমি প্রায়ই জ্বালা যন্ত্রনা করি। যখন রাজী হলেন তখন করোন মহামারী চলে এলো!
তাঁর বড় ভাই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জেনারেল জামিল কয়েকদিন আগে ফোনে মজার কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি এমজিও থাকাকালীন পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মেলা আইডিয়াসে যোগ দিতে যান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদলের নেতা হয়ে। সঙ্গতকারনেই পাক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন কাজের ফাঁকে তাঁর বড় ভাইয়ের কবরটি দেখানোর জন্য যাতে তিনি ফাতেহা পাঠ করতে পারেন। তাঁকে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট জিয়া উদ্দিন আহসান, সিতারা ই জুরাতের কবরে নিয়ে যাওয়া হলো। পাক বিমান বাহিনীর বীরদের কবরস্থান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন কবরে তাজা ফুল দেয়া। মনে করেছিলেন যে তিনি আসবেন বলে হয়তো কর্তৃপক্ষ তাজা ফুল দিয়েছে। জিজ্ঞেস করলেন প্রটোকল অফিসারকে। সে অবাক হয়ে জেনারেল জামিলকে জানালো- স্যার, পাক বিমান বাহিনী তো সব বীরদের কবরে প্রতিদিন সকালে ফুলের তোড়া দিয়ে আসছে। যতোদিন পাকিস্তান থাকবে ততোদিন তা দেয়া হবে! স্যার অভিভুত হলেন। ফাতেহা পাঠ করে চলে এলেন।জানি না স্যারদের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের এমন সম্মান আমরা এদেশে দেই বা দিতে পারি কিনা?
আমি প্রতীক্ষায় আছি কবে স্যার আমাকে তাঁর কাছে থাকা পেপার কাটিংসহ তাঁর বড় ভাইয়ের পূর্ণাঙ্গ কাহিনী তুলে দিবেন? সব কাগজপত্র, ছবি নিয়ে তিনি যে বসে আছেন!
কাহিনী আরো আছে! ২০০৯ সালে জেনারেল জামিল স্যারের ইচ্ছে হলো তিনি অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের সংগঠন- রাওয়ার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন।রাওয়াতে কোন রাজনীতি নেই। তারপরও ভালো প্রচার প্রচারণা চলে। এলাহী কায় কারবার শুরু হয়। স্যারের প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলে ছিলেন বিটিআরসি’র তদানীন্তন চেয়ারম্যান মরহুম মেজর জেনারেল জিয়া আহমেদ। উনি আবার একসময় সিগন্যালস ট্রেনিং সেন্টার ও স্কুলে আমার ইন্সট্রাক্টর ছিলেন। অনেক স্নেহ করতেন। একদিন সন্ধ্যায় তাঁর চাপাচাপিতে রাওয়া বারে যেতে হলো ইলেকশন ক্যাম্পেইনে সহযোগিতা করার জন্য। জে.জিয়া যেহেতু বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান তাই সঙ্গতকারনেই তাঁর প্রচারণায় জৌলুস দেখতে পেলাম। রাত এগারোটার দিকে মনে হলো জেনারেল জামিল কি করছেন একটু দেখে আসি। হাটতে হাটতে মহাখালি ডি ও এইচ এস-এ তাঁর বাসায় গেলাম। তিনি আরো দুইজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে নিয়ে বসে আছেন। মনমরা ভাব।
নির্বাচনে তিনি কোন পরিচিতিমুক লিফলেট পর্য়ন্ত ছাপাননি। কোন পার্টি দেননি।জে. জিয়ার প্রচারণার কথা বলাতে তিনি বললেন, আমি কিছুই ছাপাবো না,কিছুই করবো না। কোন এক্সট্রা প্রচারণার প্রশ্নই আসে না। মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। তা নিয়েও কোন দিন শোরগোল তুলিনি। অফিসাররা যদি মনে করে আমি অফিসার সুলভ জেনারেল তাহলে ভোট দিবে, নাহয় দিবে না। ব্যস। স্যারকে কোনভাবেই রাজী করানো গেল না প্রচারণা জোরদার করানোয়। তিনি সোজা বলে দিলেন-রাওয়া কোন গুলশান বা উত্তরা ক্লাব নয়। এটা অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের সংগঠন।সামরিক অফিসার মানে ডিগনিটি ও অনার, সহজ জীবনযাপন।
নির্বাচনের দিন গিয়ে দেখি স্যার একপাশে চুপচাপ দাড়িয়ে আছেন। নবম বিএমএ লং কোর্সের মেজর জামান শুধু সাথে।গেটে ঢোকার মুখেই অনেক অফিসারকে দেখলাম জে.জিয়ার প্যানেলের চকমকে ব্যাজ পড়ে, গলায় কার্ড ঝুলিয়ে দাড়িয়ে আছেন। যেই না কেউ গাড়ি থেকে নামছেন অমনি তাকে পুরো প্যানেল পরিচিতি দিয়ে দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে জে. জামিলের প্যানেলের বলতে গেলে কোন খবর নেই! আমি অবাক হয়ে তাঁর কাছে গেলে তিনি বরাবরের মতো মৃদু স্বরে বললেন- তাঁর প্রতিপক্ষ অনেক রকমের লিফলেট, প্রচারকর্মী নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ওই অবস্থায় তাঁর জয়ের খুব একটা সম্ভাবনা নেই। বললাম- স্যার, সহজ,সরল কিন্তু যোদ্ধাদের কোন লিফলেট লাগে না। মোমিনের কোন টেনশন থাকতে নেই।আপনি এমনিতেই ভোট পাবেন । জেনারেল জামিল সোজা হয়ে দাড়ালেন। বিপুল ভোটে জয়লাভ করলেন।তাঁর প্যানেলের জয়জয়কার! কিন্তু ফল ঘোষনার পরও তিনি যথারীতি নিস্পৃহ!
জেনারেল জামিল এই বয়সেও দিব্যি গ্রামে গিয়ে ঘুরে বেড়ান, পুকুরে মাছ ধরেন, বিদেশে গিয়ে প্যারা সেইলিং করেন! সাথে থাকেন ভাবী। আমরা কুকড়ে থাকি, তিনি মনের আনন্দে থাকেন।
স্যার ও ভাবীর মতো পরহেজগার ও সরল মানুষ খুব কম দেখেছি। এমন একজন নামকরা মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু কোনদিন কোন অহংকার দেখিনি। তাঁরা দু’জনই অত্যন্ত ধার্মিক মানুষ।জে.জামিল একজন অফিসার তাঁর ডিগনিটি বজায় রেখে যেভাবে চলার সেভাবে চলেন। কোন শো অফ নেই। স্যারের কোন দামী ঘড়ি নেই, দামী গাড়ি নেই।আছে মুক্তিযোদ্ধার গর্ব। তিনি তাঁর সেই গর্ব প্রকাশ করেন কচিৎ কখনো। মাথায় একটা সামরিক ব্যারে ক্যাপ, কোটের পকেটের উপর বীর প্রতীকের মেডালসহ বাকি মেডালগুলো ঝুলিয়ে গর্বিত সৈনিক হিসাবে অংশ নেন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানমালায়। কোন শান শওকত, বাসায় রংচং মাখানো সজ্জা, হম্বিতম্বি-কোনটাই স্যারের সাথে যায় না।মুক্তিযোদ্ধার তকমা নিয়েও কোন সুবিধা নেয়ার মধ্যে তিনি নেই।নীরবে নিভৃতে জীবনযাপন করেন। তবে যখনি দেখি ও তাঁর সাথে কথা বলি তখনি মনে হয় অফিসার কাকে বলে সেটা তাঁর রক্ত মাংসে মিশে আছে।পরিবারগতভাবে অত্যন্ত অভিজাত ও স্বচ্ছল হলেও তাঁকে কখনো দেখিনি বাহাদুরি করতে বা ডাট দেখাতে।
গত ২০২০ সালে তিনি ও ভাবী প্রায় দুই সপ্তাহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিএমএইচ-এ ছিলেন। আমরা তো সবাই টেনশনে। কিন্তু স্যার দেখি উল্টো আমাদের পোস্টে কমেন্ট করে আমাদের চাঙ্গা করছেন। একেই বলে যোদ্ধা। তিনি জাত যোদ্ধা। আল্লাহর অশেষ রহমতে তাই তিনি ও তাঁর স্ত্রী করোনা মুক্ত হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাঁদের দু’জনকেই আরো হায়তাদান করুন, সুস্থ রাখুন। কারন, এই পৃথিবীতে এমন মানুষ এখন অনেক কম।
আবু রূশদ: লেখক, সাংবাদিক ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, সম্পাদক: ডিফেন্স জার্নাল

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news