সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূতের গাড়িবহরে হামলার অধিকতর তদন্তের নির্দেশ
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম আজ বুধবার এই আদেশ দেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: চার বছর আগে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলাম আজ বুধবার এই আদেশ দেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) জসীম উদ্দিন। তিনি বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার মামলায় ছয়জন সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যে তিনজন সাক্ষী ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যক্তির জড়িত থাকার কথা বলেন। এ জন্য রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অধিকতর তদন্ত চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
২০১৮ সালের ৪ আগস্ট রাতে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মোহাম্মদপুর এলাকার বাসায় নৈশভোজে অংশ নেন মার্শা বার্নিকাট। নৈশভোজ শেষে রাত ১১টার দিকে ফেরার পথে সশস্ত্র একদল মোটরসাইকেল আরোহী রাষ্ট্রদূতের গাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা গাড়িবহরের দিকে এগোনোর সময় তাদের বাধা দেওয়া হলে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা দলের দুই সদস্যকে ঘুষি মারে হামলাকারীরা। গাড়িবহর চলে যাওয়ার সময় দুটি গাড়িতে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৫ মার্চ আদালতে ৯ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রে বলা হয়, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় নৈশভোজে বার্নিকাট অংশগ্রহণ করেন। সেখানে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে করা হয়েছে এমন সন্দেহে সেদিন এ হামলার ঘটনা ঘটে। তবে এটাকে পুলিশের পক্ষ থেকে ষড়যন্ত্র বলা ধৃষ্টতা এবং মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করেন বদিউল আলম।
অভিযোগপত্রের তথ্য বলছে, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র হওয়ার সন্দেহের জের ধরে সেদিন স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা নাইমুল হাসানের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটি দল ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়ি ধাওয়া করলে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়, বাড়ির জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়। বদিউল আলম মজুমদার, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রভুক্ত ৯ আসামি হলেন ছাত্রলীগ নেতা নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, শহিদুল আলম খান, তানহা ওরফে মুজাহিদ, সাজু ইসলাম, রাজীবুল ইসলাম, মো. সিয়াম ও অলি আহমেদ।
ওই সময় বদিউল আলম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যোগাযোগ এবং গৃহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আমার বাড়িতে আমি একটা নৈশভোজের আয়োজন করেছি। এটাকে পুলিশের পক্ষ থেকে ষড়যন্ত্র বলা ধৃষ্টতা এবং মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। এ ঘটনা থেকে ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারত। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আহত বা নিহত হতে পারতেন। আমরা হতে পারতাম।’ তিনি বলেছিলেন, লোকজনকে ডেকে এই হামলা করা হয়েছে বলে ইশতিয়াক মাহমুদ নামের এক ব্যক্তি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। অথচ অভিযোগপত্র থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রহসনের চার্জশিট।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews