বাংলাদেশে ইভিএম উপযোগী নয়: মেয়র মোস্তাফিজার রহমান
নির্বাচন নিয়ে আজ বুধবার বিকেলে নিজের বাসায় তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় ইভিএম নিয়ে ভোগান্তি, আওয়ামী লীগের ভরাডুবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতো দলের উত্থানসহ নানা বিষয় উঠে আসে।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: রংপুর সিটি করপোরেশনে গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান। নির্বাচন নিয়ে আজ বুধবার বিকেলে নিজের বাসায় তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় ইভিএম নিয়ে ভোগান্তি, আওয়ামী লীগের ভরাডুবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতো দলের উত্থানসহ নানা বিষয় উঠে আসে।
প্রথম আলো: দ্বিতীয়বারের মতো বিপুল ভোটে জয়ী হলেন। এই জয় কি প্রার্থীর জনপ্রিয়তায় নাকি লাঙ্গল প্রতীক প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে?
মোস্তাফিজার: রংপুরের মানুষ ইভিএমে ভোট দিতে অভ্যস্ত নয়। বয়স্ক ও নারী ভোটাররা বেশি সমস্যায় পড়েছেন। ইভিএম একটা ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা। বাংলাদেশে ভোটের জন্য ইভিএম উপযোগী নয়। কোথাও আঙুলের ছাপ মেলে না, কোথাও এটি হ্যাং করেছে৷ ইভিএমের কারণে অনেক প্রার্থী তাঁদের প্রত্যাশিত ভোট পাননি। ইভিএমে ভোট পুনর্গণনার সুযোগও নেই।
প্রথম আলো: জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কোন্দলের উত্তাপ রংপুরেও আছে। আপনার এমন ফলাফলে কি তার কোনো প্রভাব পড়েছে?
মোস্তাফিজার: জাতীয় পার্টিতেও সুবিধাভোগী, দালাল আছে। তাঁরা কোনোভাবে মহাজোটের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্ন দেখেন৷ রংপুরের মাথা বিক্রি করে জাতীয় পার্টির কেন্দ্র চলছে। রংপুরের জাপা না থাকলে কেন্দ্রের শুধু সাইনবোর্ড নিয়ে চলতে হতো। এরশাদের কর্মী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীকের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে লড়েছি৷ ক্ষমতার জন্য কারও দালালি করতে পারব না৷
প্রথম আলো: সবার ধারণা ছিল নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নৌকার প্রার্থী হলেন চতুর্থ। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী প্রায় ৫০ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হলেন। নৌকার এই অবস্থা ও ইসলামী আন্দোলনের উত্থানকে কীভাবে দেখছেন?
মোস্তাফিজার: আওয়ামী লীগ প্রায় ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায়। দলটির অনেক সহযোগী সংগঠন আছে। তাদের নেতা-কর্মীরাও ভোট দিলে নৌকার প্রার্থী ৪০ হাজার ভোট পেতেন৷ এটা নেতৃত্বের ব্যর্থতা৷ তারা নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারেনি। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে ছিল না, তাদের ভোট পেয়েছে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। হাতপাখার এত ভোট পাওয়ার পেছনে অলৌকিক কিছু নেই।
প্রথম আলো: প্রথমবার মেয়র হওয়ার আগে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এবার ইশতেহারেও বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন? ভবিষ্যতে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কী কী উদ্যোগ নেবেন?
মোস্তাফিজার: আগের ইশতেহারের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছি। বাকি কাজ করতে অর্থের প্রয়োজন ছিল৷ খেলার মাঠের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে অর্থ দরকার। এবারও জনবান্ধব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। এগুলো যতটা সম্ভব পূরণ করব। রাস্তাঘাট, ড্রেন হবে৷ স্বাস্থ্য খাতে জোর দেব। শ্যামাসুন্দরী খাল দখলমুক্ত ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে।
প্রথম আলো: ভবিষ্যতে কাজের সময় নির্বাচনে অংশ নেওয়া পরাজিত প্রার্থীদের মতামতকে মূল্যায়ন করবেন কীভাবে?
মোস্তাফিজার: রংপুর সব দল ও মতের মানুষের, মেয়রের একার নয়। সব দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, উন্নয়নকাজে মতামত দিন, সহযোগিতা করুন। ভিন্নমতকে সম্মান জানাই। যে উন্নয়নে সবাই অংশ নিতে পারে, সেটাই তো প্রকৃত উন্নয়ন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews