যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে যুবকের রগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ
প্রথম নিউজ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর পাংশায় টেন্ডার সিডিউল কেনা নিয়ে দ্বন্দ্বে হৃদয় মীর (২৭) নামে এক যুবককে পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে পাংশা উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
আহত হৃদয় মীর পাংশা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের রহমান মীরের ছেলে। পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স ও হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
আহত হৃদয় মীর বলেন, পাংশা উপজেলা পরিষদে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের টেন্ডার সিডিউল বিক্রির কার্যক্রম চলছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আমি সিডিউল কিনতে উপজেলা পরিষদের সামনে যাই। এ সময় পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জালাল বিশ্বাস এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন এবং গালিগালাজ করতে করতে বলেন যে, ‘তোর এতবড় সাহস কীভাবে হলো? সিডিউল কিনতে এসেছিস কোন সাহসে?’ এ সময় জালাল বিশ্বাসের সঙ্গে এসে যুক্ত হন পাংশা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহিদুল ইসলাম মারুফ ও তাদের সহযোগী মনোয়ার হোসেন জনি। জনির হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সে অস্ত্র উঠিয়ে ভয় দেখিয়ে আমার সঙ্গে থাকা লোকজনকে তাড়িয়ে দেয়। তিনি আরও বলেন, তারা তিনজন মিলে আমাকে হাতুড়ি দিয়ে মারতে মারতে উপজেলা পরিষদের পাশে লিচু গাছতলায় নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে উপুড় করে শুইয়ে জালাল বিশ্বাস আমার মাথা মাটির সঙ্গে চেপে ধরে, মারুফ আমার পিঠের ওপর বসে এবং জনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার বাম পায়ের গোড়ালির ওপরের রগ কেটে ফেলে। আমি চিৎকার করলে তারা আমার মুখের ভেতরে আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকিয়ে আমার দুটি দাঁত ভেঙে ফেলে। পরে তারা হাতুড়ি দিয়ে আমাকে মারপিট করে এবং ধারালো চাপাতি দিয়ে আমার মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে চলে যায়। আমার মাথায় ১৪টি সেলাই লেগেছে। সুস্থ হয়ে এ ঘটনায় মামলা করবেন বলে জানান এই যুবক।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জালাল বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। আর ঘটনার সময় আমি উপজেলাতে ছিলাম না। উপজেলায় আসার পর বিষয়টি জানতে পারি। এখানে ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহিদুল ইসলাম মারুফের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।পাংশা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।