ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় নরসিংদীর ৮ যুবক নিখোঁজ
সম্প্রতি দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবে এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, নরসিংদী: অবৈধভাবে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন নরসিংদীর আট যুবক। নিখোঁজ সবাই নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বাসিন্দার বলে জানা গেছে। সম্প্রতি দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে ট্রলার ডুবে এ ঘটনা ঘটে। বেঁচে যাওয়া কয়েকজন ও দালাল সূত্রে শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাতে এ খবর নিখোঁজদের স্বজনের কাছে পৌঁছার পর থেকেই মাতম করছেন পরিবারের সদস্যরা।
পরিচয় পাওয়া নিখোঁজ সাত যুবক হলেন- বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোখলেছুর রহমান (২০), একই এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৫), কামাল হেসেন (৩৪), ভাটের চর গ্রামের হাসান উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা (২২), দুলালকান্দি গ্রামের হারুন রশীদ রশিদের ছেলে মনির হোসেন (২২), একই এলাকার মোতালিব মিয়ার ছেলে রবিউল (৩৩), টান লক্ষ্মীপুর গ্রামের মহরম আলীর ছেলে স্বাধীন মিয়া (২০) ও নিলক্ষিয়া গ্রামের আমান মিয়া (২১)।
নিখোঁজ কামাল মিয়ার ছোট ভাই জামাল মিয়া জাগো নিউজকে জানান, ১০ থেকে ১২ লাখ টাকায় তারা লিবিয়া থেকে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে যেতে চেয়েছিলেন। লিবিয়ায় থাকা মূল দালাল বেলাব উপজেলার দুলালকান্দি গ্রামের বাসিন্দা জাকির হোসেন ও তার সহযোগী শাহিনুর বেগমের মাধ্যমে ওই টাকা দিয়ে ৫ থেকে ৬ মাস আগে দেশ ছাড়েন নিখোঁজরা। শুক্রবার খবর আসে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ আছেন তারা।
বেশ কিছুদিন গেমঘরে রেখে বুধবার (৯ আগস্ট) রাত ৮ টার দিকে ডিঙ্গি নৌকায় তুলে ইতালির পথে যাত্রা করেন। কিন্তু ৪০ মিনিট পর ডিঙ্গি নৌকাডুবে যায়। জাকিরের তত্ত্বাবধানে ২০ জন থেকে ১২ জন ফিরে এলেও আটজনের খোঁজ মিলেনি। এ তথ্য দালাল জাকির হোসেন স্থানীয় মিলন মেম্বারের মাধ্যমে আমাদের জানানো হয়।
এদিকে, দালাল জাকির হোসেন ও শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। এ বিষয়ে দুলালকান্দি গ্রামের ইউপি সদস্য মিলন জানান, নিখোঁজের খবর পেয়ে দালাল জাকিরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন অন্য একজন কল রিসিভ করে জানান, জাকির হোসেনের আন্ডারে ২০ জনের থেকে ১২ জন উদ্ধার হলে ও আটজন খোঁজ পাওয় যায়নি।
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.তানভীর আহমেদ বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। নিখোঁজের বিষয় জানতে প্রবাসী ও বৈদেশি কর্মসংস্থানে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।