বুয়েটছাত্র ফারদিনের মৃত্যু: বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতদের নামে বাবার মামলা

আজ বৃহস্পতিবারসকালে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বুয়েটছাত্র ফারদিনের মৃত্যু: বান্ধবী বুশরাসহ অজ্ঞাতদের নামে বাবার মামলা
ফারদিন নূর পরশ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের (২৪) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বুশরা নামে তার এক বান্ধবীসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। রাজধানীর রামপুরা থানায় নিহত ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবারসকালে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বুধবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মামলাটি নথিভুক্ত হয়েছে। বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের বাবা বুশরাসহ অজ্ঞাতদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন গত শনিবার (৫ নভেম্বর) থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ওইদিনই রাজধানীর রামপুরা থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন। নিখোঁজের দুদিন পর গত সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এরই মধ্যে বুশরা ও শীর্ষ সংশপ্ত নামে তার দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। বান্ধবী বুশরা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গত মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা শেখ ফরহাদ বলেন, ময়নাতদন্তে আমরা দেখতে পেয়েছি, ফারদিনের মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সেই আঘাত কোনো ধারালো অস্ত্রের নয়। আঘাতের চিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের চাহিদা ও অধিকতর তথ্যের জন্য তথ্য-উপাত্ত ও আলামত মহাখালী ভিসিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে ফারদিনকে কীভাবে খুন করা হয়েছে।

ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’ এর সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন। ফারদিনের মা ফারহানা ইয়াসমিন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার নয়ামাটিতে। তিন ভাইয়ের মধ্যে ফারদিন ছিলেন সবার বড়। তার মেজ ভাই আবদুল্লাহ নূর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ছোট ভাই তামিম নূর এবছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন।

এদিকে ঘটনার তিনদিন পার হলেও এখনো মূল্য রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। রহস্য উন্মোচনে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, এলিট ফোর্স র‍্যাব, সিআইডিসহ একাধিক ইউনিট কাজ করছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকার শতাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ফারদিনের সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত ও তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করেও কাজ করছে পুলিশ।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ফারদিনকে যদি হত্যাই করা হয় তাহলে তা করেছে তার প্রতিপক্ষ কেউ। যে কি না টেকনোলজিক্যালি খুবই স্মার্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে কীভাবে খুঁজে বের করতে পারে সেসব বিষয়গুলো খুনি এড়িয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। ফারদিন নূর পরশকে কেউ হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছে কি না এবং তার আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়েও তদন্ত চলছে। এছাড়া সে কেরানীগঞ্জে কীভাবে গিয়েছিলেন, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ বলছে, যত স্মার্ট কিংবা চালাক প্রকৃতির হোক না কেন খুনিদের শনাক্তে বিশেষ কিছু দিক বিবেচনায় তদন্ত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। কিছুটা দেরি হলেও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। গত মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ফারদিনের মরদেহ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দেউলপাড়া কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom