Ad0111

বিশ্বের প্রথম জীবন্ত রোবট এখন নাকি প্রজননও করতে পারবে

মার্কিন বিজ্ঞানীরা যারা প্রথম জীবন্ত রোবট তৈরি করেছিলেন এবং নাম রেখেছিলেন জেনোবট তারা এবার সামনে আনলেন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

বিশ্বের প্রথম জীবন্ত রোবট এখন নাকি প্রজননও করতে পারবে
বিশ্বের প্রথম জীবন্ত রোবট এখন নাকি প্রজননও করতে পারবে

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : মার্কিন বিজ্ঞানীরা যারা প্রথম জীবন্ত রোবট তৈরি করেছিলেন এবং নাম রেখেছিলেন জেনোবট তারা এবার সামনে আনলেন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজ্ঞানীদের দাবি এই রোবট এখন প্রজননও করতে পারবে, তবে উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের মধ্যে যেভাবে প্রজনন প্রক্রিয়া দেখা যায় জেনোবট-এর ক্ষেত্রে তা একটু আলাদা। আফ্রিকার এক ধরনের ব্যাঙ (জেনোপাস লেভিস)-এর স্টেম সেল ব্যবহার করে এই রোবট তৈরি করা হয়েছিল। তাই তার থেকে তৈরি যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয় ‘জেনোবট’। বিজ্ঞানীদের কথায়, এটিই পৃথিবীর প্রথম ‘জ্যান্ত রোবট’। ১ মিলিমিটারের থেকেও ক্ষুদ্র এই রোবট। ২০২০ সালে জেনোবোটকে প্রথম জনসমক্ষে আনা হয়। একাধিক পরীক্ষার পর দেখা যায় যে, তারা নড়াচড়া করতে পারে, একসাথে কাজ করতে পারে এবং নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এখন ভারমন্ট ইউনিভার্সিটি, টাফ্টস ইউনিভার্সিটি এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বায়োলোজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে তারা যে কোনও প্রাণী বা উদ্ভিদ থেকে আলাদা জৈবিক প্রজননের সম্পূর্ণ নতুন রূপ আবিষ্কার করেছেন।

জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালেন ডিসকভারি সেন্টারের পরিচালক মাইকেল লেভিন বলেছেন, "আমি এই আবিষ্কার দেখে বিস্মিত হয়েছিলাম। ব্যাঙের একটি নিজস্ব প্রজনন ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তার কোষগুলিকে যখন ভ্রূণ থেকে আলাদা করা হয়েছে, একটি নতুন পরিবেশে নিজেদের মতো বাঁচার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তারা শুধু নিজেদের মতো চলার রাস্তা খুঁজে নেয়নি, প্রজননের পথও বার করে নিয়েছে!’’  স্টেম সেলগুলি হল একটি বিশেষ ধরণের কোষ যা নিজেদের বিকাশ করার ক্ষমতা রাখে। জেনোবট তৈরি করার জন্য, গবেষকরা ব্যাঙের ভ্রূণ থেকে জীবন্ত স্টেম সেলগুলিকে স্ক্র্যাপ করে এবং সেগুলিকে ইনকিউবেট করার জন্য রেখেছিলেন। এতে জিনের কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণার প্রধান লেখক জশ বোনগার্ড বলছেন, "বেশিরভাগ মানুষ রোবটকে ধাতু এবং সিরামিকের তৈরি বলে মনে করে কিন্তু রোবটের অর্থ সেটা নয়। রোবট হল এমন কিছু, যা মানুষের হয়ে নিজের মতো কাজ করে যেতে পারে।"

বোনগার্ডের কথায়, ‘‘এটা রোবটই। তবে হ্যাঁ, এটি একটি জীবও। ব্যাঙের কোষ থেকে কোনও রকম জিনগত পরিবর্তন না ঘটিয়ে এটিকে তৈরি করা হয়েছে।'' বোনগার্ড বলেছেন যে তারা দেখেছেন যে জেনোবটগুলি, যা প্রাথমিকভাবে গোলক আকৃতির ছিল এবং প্রায় ৩,০০০ কোষ থেকে তৈরি হয়েছিল, তারা এখন প্রতিলিপি করতে পারে। জেনোবটগুলি "কাইনেটিক রেপ্লিকেশন" ব্যবহার করেছে- এমন একটি প্রক্রিয়া যা আণবিক স্তরে ঘটে, তবে পুরো কোষ বা জীবের জীবনচক্রে আগে কখনও দেখা যায়নি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে, গবেষকরা এই ধরণের প্রতিলিপিতে জেনোবটগুলিকে আরও কার্যকর করার জন্য কোটি কোটি দেহের আকার পরীক্ষা করেছেন।

এক মিলিমিটারেরও কম, ০.০৪ ইঞ্চি মাপের জ়েনোবটের একটি নির্দিষ্ট দৈহিক গঠন আছে। সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে সেই গঠন তৈরি করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। এমন একটি আকার এদের দেওয়া হয়েছে, যা জীবজগতে আগে ছিল না। গবেষকদের মতে, আণবিক জীববিজ্ঞান এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংমিশ্রনে তৈরী এই রোবট মানবদেহে এবং পরিবেশের অনেকগুলি কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর মধ্যে সমুদ্রে মাইক্রোপ্লাস্টিক সংগ্রহ, রুট সিস্টেম পরিদর্শন এবং জীবনদায়ী ওষুধের মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত। ০.০৪ ইঞ্চির জেনোবোটদের সেনাবাহিনীতে ব্যবহার করা হবে। কী ভাবে, তা অবশ্য বলেননি কেউ। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই গবেষণায় অর্থ ঢেলেছে আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও। সমস্ত পর্যালোচনাটি বৈজ্ঞানিক জার্নাল পিএনএএস-এ প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: সিএনএন

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news