বিপিএল আরও গোছালো চান মাশরাফি

প্রথমে খালেদ মাহমুদ সুজন এরপর সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

বিপিএল আরও গোছালো চান মাশরাফি
বিপিএল আরও গোছালো চান মাশরাফি

প্রথম নিউজ, স্পোর্টস ডেস্ক : প্রথমে খালেদ মাহমুদ সুজন এরপর সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। গতকাল দেশের আরেক তারকা ক্রিকেটার সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও এক পথে হাঁটলেন। স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিলেন তিনি বিপিএল’র মতো আসরকে আরও গোছালো দেখতে চান। সেই সঙ্গে এই আসরের নানা সমস্যার কথাও তুলে ধরেন সংবাদ মাধ্যমে। বিপিএল’র ৮ আসরের চারটিতেই মাশরাফির হাতে শিরোপা উঠেছে। এবার তিনি খেলছেন সিলেট স্ট্রাইকার্স এর অধিনায়ক হয়ে। আজ মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএল’র নবম আসর। প্রথম ম্যাচেই মাশরাফির দল সিলেটের মুখোমুখি হবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আসরে প্রথম ম্যাচের আগে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দেশের ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিপিএল নিয়ে জানান নিজের আসন্তোষের কথা। তিনি বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে একমত।

তবে ইচ্ছার জায়গা, সীমাবদ্ধতার জায়গাও মাথায় এনেছি। লাভ না হলে তো আপনি থাকতে চাইবেন না। অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক লস করে। ওই জায়গায় ক্রিকেট বোর্ডকে দেখতে হবে। সেটা কমফোর্ট জোনে আনলে টুর্নামেন্টের চেহারা বদলে যাবে। সিলেটের দলেরই কত নাম। আজ তিন বছর পর আল্লাহ্‌ না করুক যদি স্ট্রাইকার্স না থাকে। যারা কিনেছে, তারা যাতে টিকতে পারে, সেই কমফোর্ট জোনটা তৈরি করা। এটা ক্রিকেট বোর্ডকেই করতে হবে।’ সাকিব বলেছেন- বিপিএল’র চেয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের মান অনেক ভালো। মাশরাফি এটি  মেনে নিলেও দেশের বাস্তবতার কথাও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন,  ‘ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে (ডিপিএল) একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। আমরা ক্যারিয়ারের একদম ছোট থেকে দেখে এসেছি, ঢাকা লীগকে খেলোয়াড়েরা অনেক গুরুত্ব দেয়। বিপিএল একটা অর্গানাইজেশনের  তো, অরগানাইজ করার ব্যাপার থাকে। ক্যালেন্ডার ইয়ার সেটা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালেন্ডারে কখন শুরু হবে, এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যতগুলো পয়েন্ট বললেন, এর ভেতরে খেলোয়াড় আসা-যাওয়া, ক্যালেন্ডার ইয়ার সেট করলে হয়কি, ভিন্ন দেশের খেলোয়াড়েরা জানে কোথায় পাওনা বেশি থাকলে তাদের সুইটেবল হবে। এখন বিপিএল, পিএসএল, ইউএই, দক্ষিণ আফ্রিকান লীগ একসঙ্গে হয়ে যায়, এটা একটা ঝামেলা।’  

মাশরাফি মনে করেন দেশের মার্কেট ভ্যালু নেই। যে কারণে চাইলেও বড় স্পন্সর আনা বেশ কঠিন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জটা আরেকটা জায়গায়, সেটা হচ্ছে স্পন্সরশিপ এবং মালিকানা। এই একটা জায়গায় বিশাল শূন্যস্থান থেকে যায়। আরেকটা জিনিস, অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বেনেফিট পায় বোর্ড থেকে। প্রফিট ভাগাভাগির একটা বেনেফিটিং হয়, সেটা যেহেতু হয় না, তখন আসলে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ থাকে যে, স্পন্সরশিপ থেকে সে অর্থটা বের করে আনা। এখানে একটা শূন্যস্থান (গ্যাপ) থেকেই যায়। আরেকটু অরগানাইজ করতে পারলে ভালোই হয়। কিন্তু সত্যি বলতে, বাংলাদেশে ওই পরিমাণ মার্কেট ভ্যালুও নেই। এ ধরনের টুর্নামেন্টের জন্য যে পরিমাণ মার্কেট ভ্যালু থাকার প্রয়োজন, ওই ভ্যালুও নেই। আমার কাছে মনে হয় যে, এক পর্যায়ে জোর করে আসা হয় বা আনা হয়। মার্কেট ভ্যালু থাকলে হয়তো আসার ব্যাপার থাকতো।’  যদিও সাকিব বলেছেন ভিন্ন কথা। তার মতে ১৮-২০ কোটি মানুষের দেশে  বেশ জনপ্রিয় ক্রিকেট। সেখানে মার্কেট ভ্যাল্যু চাইলেই তৈরি করা যায়।

এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমি তো এটা বললাম, কাজ না করলে তো বোঝা যাবে না। এটা তো দীর্ঘ সময়ের একটা কাজের ব্যাপার। মার্কেট ভ্যালু কতটুকু, আপনার দলের কাছে স্পন্সরশিপ কতটুকু আসতে চাচ্ছে, এগুলোতো দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। একটা দল যখন জানে যে,  আমি এই দলটার মালিক, আমি পরবর্তী ১০ বছর বা ৭ বছর এটার মালিক। তখন সে দুই বছর লস করতে পারে। ঠিক আছে, আমি আমার দলকে নিয়ে কাজ করবো, মার্কেটে প্রমোট করবো, ডিসিপ্লিন ওয়েতে, তখন কিন্তু তার যে ২ বছরে প্রফিটে সে চলে যাবে। এটা তো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের জন্য ব্যবসা। বিজনেসে যদি আপনি প্রফিট না করেন ঠিক আছে, লস হয়ে গেলে তো সমস্যা। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এজন্য দীর্ঘ সময় স্থায়ী হতে পারছে না। তবে যদি এটি প্রোপার অরগানাইজ করা হয়, যেটা সাকিব বলেছে, আমার কাছেও মনে হয়, অন্তত ৭, ৫ বা ১০ বছর যেটার যে মালিক, তাদের সঙ্গে টিম করা। নির্দিষ্ট তারিখে করা। তখন কিন্তু অনেক কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব।’ গতবার সাকিব বলেছিলেন বিপিএল চার পাঁচ নম্বরেও পড়ে না। এবার বললেন তালিকায়ই পড়ে না। আসলে মানটা কোথায় আছে এ নিয়ে মাশরাফিও কোনো সুখের সংবাদ দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ দেখলে আপনার তাই মনে হবে।

কারণ, এক মাঠে ৬-৭ দল অনুশীলন করছে। রংপুর যেমন তাদের নিজ দায়িত্বে নিজেদের মাঠে অনুশীলন করছে। এ বিষয়গুলো কিন্তু ম্যাটার করে। আমাদের ওই নির্দিষ্ট দলের সুযোগ-সুবিধা। ওই যে বললাম না, অরগানাইজ সঠিক পন্থায় করতে হবে। আপনি খালি চোখে যে কেউ এসে দেখে যে, একই মাঠে সবকিছু হচ্ছে, অনুশীলন হচ্ছে। এটা হ-য-ব-র-ল ব্যাপার, এটা বলতে পারে। কিন্তু দিন শেষে খেলার মাঠে খেলা কিন্তু খেলার মতোই হয়। একটা টুর্নামেন্টের সৌন্দর্য আছে, শুরুর দিকে একটা হাইপ তোলার ব্যাপার আছে, এ জিনিসটা হয় তো আমরা শুরু থেকেই পারিনি, এটা সত্য।’ সমালোচনা করলেও মাশরাফি বিসিবিকে দিয়েছেন নানা পরামর্শও। তিনি বলেন, ‘এই ছোট ছোট জিনিসগুলো নিয়ে যখন ক্রিকেট বোর্ড চিন্তা করে। এগুলোয় কিন্তু বড় আকার ধারণ করে। এগুলো যদি পরিবর্তন করে, তাহলে তো পরিবর্তন হবেই। পরিবর্তন না হওয়ার তো কোনো কারণ নেই। এমনও না যে, আমাদের মাঠ নেই। ফতুল্লা পড়ে আছে, আরও কিছু মাঠ পড়ে আছে। বাইরেও আছে। এগুলো যদি একটু অরগানাইজ করা যায় খারাপ হয় না।’

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom