বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর অসন্তোষ দূরে উদ্যোগ নেবে সরকার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ওমিক্রন রোধে সীমান্ত বন্ধের চিন্তা
প্রথম নিউজ, ঢাকা : বাংলাদেশ সরকারের ওপর কয়েকটি বিদেশী রাষ্ট্রের অসন্তুষ্ট হওয়ার কারণ খুঁজে বের করে তার সুরাহার উদ্যোগ নেয়া হবে বলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমরা সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। কোনো কোনো দেশ আমাদের ওপর অসন্তুষ্ট। আমরা তার কারণ খুঁজছি, তাদের অসন্তোষ দূর করার চেষ্টা করছি। এ ছাড়া ওমিক্রনের বিস্তার রোধে ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধে ভাবা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কারো সাথে শত্রæতা নয়, সবার সাথে বন্ধুত্ব’ এই পররাষ্ট্রনীতির আলোকেই আমরা কাজ করছি। আমরা নিরপেক্ষ নীতিটা ধরে রাখতে চাই। সবার সাথে আরো বেশি সম্পৃক্ত হতে চাই। গতকাল সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ড. মোমেন এসব কথা বলেন। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) ও এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞা এবং তা প্রত্যাহারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার দেয়া চিঠির প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বড়দিন এবং নতুন বছরের ছুটি শেষে গতকাল সোমবারই প্রথম অফিস খুলেছে। চিঠি ইতোমধ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিøঙ্কেনের কাছে পৌঁছে গেছে। দেখি কি জবাব আসে। আশা করি তাদের জবাবে ইতিবাচক কিছু আসবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু দেশ কী কারণে আমাদের ওপর অসন্তুষ্ট তা খুঁজে বের করে আমরা সুরাহা করার চেষ্টা করব। তারা কোনো মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে আমরা তাদের সত্য তথ্য দিয়ে বুঝাব। আশা করি তারা আমাদের ঝুঝবেন। কারণ ওই সব দেশের নেতৃত্বের পরিপক্বতা রয়েছে। তারা দায়িত্বশীলও বটে। তা ছাড়া আমরা আমাদের দুর্বলতাগুলোও চিহ্নিত করে তা সংশোধনের চেষ্টা করব।
২০২১ সালকে বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন এবং সাফল্যের বছর হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এ সাফল্যের ধারাবাহিকতা আমরা ধরে রাখতে চেষ্টা করব। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে সেবা এবং অন্য কার্যক্রমে ইতিবাচক অনেক পরিবর্তন এসেছে। মিশনগুলোতে দুর্নীতির প্রশ্নে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে সরাসরি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এখানে দুর্নীতিবাজদের কোনো স্থান হবে না।
করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তারের কারণে ভারতের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগ সীমিত করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশ থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ওমিক্রনের বিস্তারে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। পশ্চিমবঙ্গে যেভাবে ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ছে তাতে বেনাপোল স্থলবন্দর বন্ধ করতে হয় কি না, তা নিয়ে ভাবছি। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আশা করি পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালো পরামর্শ দিতে পারবে।
ইউএসএআইডির প্রধান ফেব্রæয়ারিতে আসছেন : ড. মোমেন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা ইউএসএআইডির প্রশাসক সামান্থা পাওয়ার আগামী মাসে বাংলাদেশ সফরে আসছেন। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের বেশ কিছু নিয়মিত সংলাপ রয়েছে, সেগুলো ধারাবাহিকভাবে চলবে। ফেব্রæয়ারি মাসে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এর আগেরটা যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে। এবার তারা নিজেরাই আগ্রহ দেখিয়েছে। এটি ভালো খবর। আমরা বিনিয়োগ চাই। এ বিনিয়োগ সম্মেলনকে সামনে রেখে সামান্থা পাওয়ার বাংলাদেশ আসতে চেয়েছেন। আমরা তাকে স্বাগত জানাই। এ সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: