বিএনপি নির্বাচনে আসলে ইসি ও জাতির জন্য সৌভাগ্যের হবে: সিইসি

রোববার বিকালে নির্বাচন ভবনে মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সিইসি বলেন, বিএনপিকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি।

বিএনপি নির্বাচনে আসলে ইসি ও জাতির জন্য সৌভাগ্যের হবে: সিইসি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপি ভোটে এলে নির্বাচন কমিশন এবং পুরো জাতির জন্য সৌভাগ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। রোববার বিকালে নির্বাচন ভবনে মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সিইসি বলেন, বিএনপিকে আমরা আহ্বান জানিয়েছি। একবার নয়, দু’বার নয়, পাঁচ বার নয়, দশবার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমি জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণেও বলেছিলাম সময় ফুরিয়ে যায়নি। এখনো সুযোগ আছে। আমরা সব সময় সংলাপের কথা বলেছি। সব সময় সমঝোতার কথা বলেছি। উৎসবমুখর ও অনুকূল পরিবেশের কথা বলেছি। সবার মধ্যে যদি সমঝোতা হয় তাহলে আমাদের জন্য জিনিসটা আরও অনুকূল হয়ে ওঠে। আমরা এখনো আশা করি হয়তো ওনারা আসতেও পারেন। যদি আসেন সেটা আমাদের জন্য এবং পুরো জাতির জন্য একটা সৌভাগ্য বয়ে আনবে। কারণ, আমরা চাই নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হোক। 

গুঞ্জন আছে ভোটের তারিখ পেছানো হবে-এ বিষয়ে ইসি’র অবস্থান জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এরকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমিসহ আমাদের মাননীয় কমিশনাররা বলেছেন, যদি বিএনপি নির্বাচনে আসে এতে যদি প্রয়োজন হয় তফসিলটা রিশিডিউল (পুনঃনির্ধারণ) করা যেতে পারে। ওটাকে নির্বাচন পেছানোর কথা বলা হয়নি। তফসিলটা রিশিডিউল করে তাদের যদি অ্যাকমোডেট করার সুযোগ থাকে সেই জিনিসটা করা হবে। এটাই আমাদের কমিশনের মতামত।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি গণভবনে মিটিং করে থাকেন তাহলে অসুবিধাটা কোথায়? কারণ, আচরণবিধিমালা প্রয়োগের সময় তো আমাদের এখনো আসেনি। প্রধানমন্ত্রী কোথায় মিটিং করছেন, কী মিটিং করছেন, উনি যদি...প্রধানমন্ত্রী কোনো প্রার্থী নন। হয়তো বা উনি সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন। উনি প্রার্থী হবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক চূড়ান্তভাবে গৃহীত হওয়ার পরে। কাজেই আইন অনুযায়ী প্রার্থী হওয়ার পরে কোনো আচরণ লঙ্ঘন করা যাবে না। প্রার্থী এবং প্রার্থীর পক্ষে যে কাজ করবে সে-ও আইন ভঙ্গ করতে পারবে না। চূড়ান্ত প্রার্থী হওয়ার আগে প্রচারণায় বাধা নেই- মন্তব্য করে সিইসি বলেন, এখন যদি নাঙ্গল নিয়ে, নৌকা নিয়ে, বাটি নিয়ে ওনারা প্রচারণা করেন, তাতে কোনো বাধা নেই। আমরা নিয়ন্ত্রণ করবো চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তখনই হবে, যখন রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষণা করবেন এই পাঁচজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তখন আমরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করবো।

আমরা তখন দেখবো নির্বাচনী কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে কিনা। যদি লঙ্ঘন করেন, তাহলে আমরা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সিইসি আরও বলেন, কোনো আইনে বলা নেই যে, দলীয় ফরম কেনার সময় শোডাউন করতে পারবে না, দলবদ্ধভাবে যেতে পারবেন না। এখনো নির্বাচন আচরণ বিধিমালার প্রযোজ্য হয়নি। আমাদের আইনে বোধ হয় যেটি বলা আছে যখন মনোনয়নপত্র দাখিল করতে যাবে। আমরা কিন্তু সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। আইনের যে পরিধি সেই পরিধির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার চেষ্টা করবো। মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে কী করা যাবে, আর কী যাবে না। 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রশাসনের রদবদল কে কখন করেছিল? বিচারপতি লতিফুর রহমান সাহেব করেছেন। তিনি সিইসি ছিলেন কিনা জানি না। আমরা নির্বাচনের স্বার্থে যেটা ভালো মনে করবো, সেটা করবো। আমরা এখতিয়ারের বাইরে যাবো না। এখতিয়ারের মধ্যে যা আছে করবো।
সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, সেনাবাহিনী (সশস্ত্র বাহিনী) নিয়ে একেবারে শেষ পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো। যদি প্রয়োজন মনে করি, চাইলে তারা (সরকার) আমাদের দেবে। এ নিয়ে কোনো সংশয় নেই।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই আইন সচিব বলেন, নির্বাচন-পূর্ব সময় হচ্ছে তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করা পর্যন্ত। এতে কতোগুলো ধাপ আছে। যখনই তফসিল ঘোষণা করে থাকি একটা ধাপ হচ্ছে মনোনয়নপত্র দাখিল পর্যন্ত। এরপর বাছাই। এরপরও কিছু স্টেজ থাকে। এরপর আপিল স্টেজ থাকে। শুনানি করে সিদ্ধান্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেবো। এরপর থাকে প্রত্যাহার। সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে রিটার্নিং অফিসার চূড়ান্তভাবে অ্যালোকেট করবেন এবং বলবেন এখন তোমরা প্রচার করতে পারবে। এরপর ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে সেটা থেমে যাবে।