বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: বিএনপি

একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সমর্থন দিয়ে তারা বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ভারত: বিএনপি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ভারত কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ভারত সরকার, তাদের দেশের রাজনীতিবিদদের বোঝা উচিত বাংলাদেশের জনগণ কেন তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সমর্থন দিয়ে তারা বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের উচিত বাংলাদেশের জনগণ যা চায় সেটিকে সমর্থন দেয়া। গতকাল সকালে বনানীতে অবরোধের সমর্থনে মিছিল শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, সরকার দেউলিয়া হয়ে গিয়ে সঙ্গী খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু কোথাও সাড়া না পেয়ে গোয়েন্দাদের দিয়ে দলছুট কিছু নেতাদের বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। হালুয়া-রুটির ভাগ পেতে কয়েকজন গেলেও মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

প্রতিবেশী দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া একটি রিপোর্টের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত এখন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। প্রায় প্রতিদিন বিএসএফ সেখানে বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করছে। তারা বাংলাদেশে একতরফা বাণিজ্য করলেও বাংলাদেশকে কোনো ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে তারা নানা উপায়ে হাজারো কোটি টাকা রেমিট্যান্স নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদশের বর্তমান সরকার তাদেরকে সবকিছু উজাড় করে দিলেও প্রাপ্তির খাতা শুধুই শূন্য।

দিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক বিস্ময়কর- 

 এদিকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে ৯০ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের বৈঠককে বিস্ময়কর মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গতকাল বাংলাদেশের পরাষ্ট্র সচিব দিল্লিতে ৯০টি দেশের কূটনৈতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বাংলাদেশে কি সেই সমস্ত দেশের দূতাবাসগুলো নেই? দিল্লিতে গিয়ে বৈঠক করতে হলো কেন? ভারতই কেন বা আয়োজন করে দিলো? ভারত যদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে থাকে তাহলে তো তাদের বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে থাকার কথা ছিল। আজকে তো ইউরোপ-আমেরিকা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে স্বোচ্চার। যে সরকারের একদলীয় দুঃশাসনে দেশের সাধারণ মানুষ সবাই পিষ্ট সেই সরকারের পক্ষে কাজ করানোর জন্য দিল্লিতে ৯০টি দেশের কূটনৈতিকদের বৈঠক আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। আমি বিস্মিত হয়েছি। বিকালে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, দেশ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এক দুর্বিষহ দুর্ভিক্ষদের কাছে আটকে আছে দেশের জনগণ। রাষ্ট্রক্ষমতাকে হাতের মুঠোয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যা ইচ্ছা তাই করছে রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করে। সেই রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যারা কথা বলছে তাদেরকে এলিমেন্ট করছে। সেটা অনেক আগে থেকেই তিনি করে আসছেন এবার তিনি পুরোদমে করছেন।
বিএনপি’র এই নেতা বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী থেমে নেই। রাষ্ট্রের প্রশাসন ও তার গড়ে তোলা ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ’৭১-এর সেই ভয়াল রাত্রির পরিস্থিতি বর্তমান বাংলাদেশে তৈরি করেছে। বর্তমান প্রজন্ম ৭১ সালের সেই ভয়াল রাত্রি দেখেনি কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি দেখে তারা বুঝতে পারছে তখন কী হয়েছিল। একাত্তরের মতো গ্রামগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দেখিয়ে দিচ্ছে কোনটা বিএনপি’র বাড়ি। বিএনপি নেতাকর্মী কোথায় বসবাস করে, তাদের পরিবার কোথায় বসবাস করে। ঠিক ৭১ সালে একই ঘটনা ঘটিয়েছে শান্তি কমিটি আলবদররা। তারা পাকিস্তানি বাহিনীকে দেখিয়ে দিয়েছে এই বাড়ির মানুষ স্বাধীনতাকামী। এই বাড়ির মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত তখন বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা যারা থাকতেন তাদেরকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে গিয়ে জুলুম-নির্যাতন করতো। এখন দেশের পরিস্থিতি ঠিক ওই রকমই হয়েছে। ’৭১-এর যেন পুনরাবৃত্তি হয়েছে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের মধ্যে।