বিএনপি নেতা রিজভী কারাগারে ফের অসুস্থ
প্রথম নিউজ ঢাকা :আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার পথে ফের অসুস্থ হয়েছেন কারাবন্দি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরনো ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে তাকে প্রিজন ভ্যানে করে কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার পথেই অসুস্থ হন বলে জানান রিজভীর সহধর্মিণী আরজুমান আরা বেগম। এমতাবস্থায় ঈদের আগে শুধু নয়, যত দ্রুত সম্ভব রিজভীকে মুক্তি দিয়ে উন্নত হাসপাতালে চিকিৎসার করানোর দাবি জানান তিনি।
রিজভীর স্ত্রী বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে রুহুল কবির রিজভীকে প্রিজন ভ্যানে করে কেরাণীগঞ্জের কারাগার থেকে পুরান ঢাকার সিএমএম কোর্টে নিয়ে আসা হয়। এরপর দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে একইভাবে তাকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত দুপুর বারোটায় তো প্রচন্ড রোদ। এমনতিইে রিজভী একজন বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তি তার ওপর প্রচন্ড রোদের সময় প্রিজন ভ্যানে করে তাকে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা এবং নিয়ে যাওয়ার কারণে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। শুনেছি পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন রিজভী। এমনতিইে তাকে আদালতে খুবই কাহিল দেখাচ্ছিল বলে তিনি বলেন।
তিনি আরও বলেন, রিজভীর অসুস্থতার খবর শোনার পর কারাগারে চিকিৎসককে কয়েকবার ফোন করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
রিজভীর অসুস্থতার বিষয়ে জানতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) সুভার কুমার ঘোষকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি।
এরআগে রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম কারাগারে ও আদালতে রিজভীর সঙ্গে দেখা করতে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশির দশকে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তখন দেশে ও পরে বিদেশে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর মাঝেমধ্যে তার পেটে সমস্যা হতো। সেই থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে রিজভী হাতের স্পর্শে খাবার খান না। খোলা পানি খেতে পারেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে বোতলজাত পানি পান করতে হয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিজভীকে। অনতিবিলম্বে রুহুল কবির রিজভীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে উন্নত ও সুচিকিৎসার দাবি জানান তার স্ত্রী আরজুমান আরা।
উল্লেখ্য যে, গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওইদিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেদিন রুহুল কবির রিজভীকেও আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে দলের বিভিন্ন বিষয়ে গণমাধ্যমের সাথে নিয়মিত কথা বলতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ও হামলা-মামলা নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন করতেন রিজভী।