ফেসবুক লাইভে এসে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করলেন নায়ক রিয়াজের শ্বশুর
ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান (৫৮)।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আবু মহসিন খান (৫৮)। বুধবার রাত ৯টার দিকে ধানমন্ডির ৭ নম্বর রোডের একটি বাড়ির লেভেল-৫ এর একটি ফ্ল্যাটে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মিয়া জানান, নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর আগে লাইভে এসে মহসিন খান বলেন, আমি ঢাকায় থাকি, আমার বয়স ৫৮ বছর। কোনো একসময় আমি খুব ভালো ব্যবসায়ী ছিলাম। বর্তমানে আমি ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। এখন আমার কোনো ব্যবসা বা কোনো কিছুই নেই। আজকের লাইভে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের জানানো।এ অভিজ্ঞতা থেকে আপনারা হয়ত অনেক কিছু জানতে পারবেন, সাবধানতা অবলম্বন করবেন। গত ৩০ তারিখ আমার খালা মারা যান। ওনার একটিমাত্র ছেলে, কিন্তু মা মারা যাওয়ার খবরে পেয়েও সে দেশে আসেনি। এ বিষয়টি আমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছে। আমার একটা ছেলে আছে, সে অস্ট্রেলিয়াতে থাকে, আমি আমার বাসায় সম্পূর্ণ একা থাকি। খালা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার ভেতরে ভয় ঢুকে গেছে। আমি যদি আমার বাসায় মরে পড়ে থাকি, আমার মনে হয় না এক সপ্তাহেও কেউ জানতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যা কিছু করি, সবই পরিবার ও সন্তানের জন্য। একবার চিন্তা করে দেখেন, নিজের আয় করা অর্থের ২০ শতাংশও নিজের জন্য ব্যয় করেন না। করোনা শুরুর আগ থেকে আমি বাংলাদেশে আছি। একা থাকা যে কী কষ্ট, তা যারা একা থাকেন তারাই জানেন। আমার আর পৃথিবীর প্রতি, পৃথিবীর মানুষের জন্য কোনো ভালোবাসা নেই। কারণ যাদের জন্য আমি বেশি করেছি, তাদের কাছ থেকেই আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল বাবুল, যাকে আমি নিজে না খেয়ে খাইয়েছি। সে আমার প্রায় ২৩ থেকে ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে। এভাবে আমি বিভিন্ন মানুষের কাছে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো পাই। সবশেষ আমি নোবেল নামে একজনকে বিশ্বাস করি। যাকে আমি মিনারেল ওয়াটার প্ল্যান্টের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু দুই বছরেও সেই প্ল্যান্টের যন্ত্র সে কেনেনি। পরে তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে, ঝগড়া হয়। এরপর সে দুই দফায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়। বাকি টাকা সে আমাকে দিচ্ছে না। মানুষ কেন এতো লোভী হয়? লাইভের এক পর্যায়ে এসে তিনি ছেলে-মেয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। তারপর লাইভের ১৬ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের মাথায় তিনি আত্মহত্যা করেন। তার আত্মহত্যা করার পরও লাইভ চলছিল। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এই লাইভ চলমান থাকে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: