প্রথম নিউজ, অনলাইন: প্রশাসনে আওয়ামী লীগ সরকারের দোসরদের রেখে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর দক্ষিণখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহিদ জাহীদুজ্জামান তানভীরের স্মরণে আয়োজিত সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সারাদেশে প্রায় ২ হাজার লোকের জীবন কেড়ে নিয়েছে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকার। সেই আওয়ামী লীগের দোসররা এখনও প্রশাসনে রয়েছে। যারা হাসিনাকে রক্ষা করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছেন, তারাই ক্ষমতায় রয়ে গেছেন।’
তাই ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। হত্যাকারীদের বিচার ছাড়া রাষ্ট্রের কোনো সংস্কার সম্ভব নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বারবার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে আওয়ামী লীগ কর্তৃত্ববাদী হয়ে সবশেষে ছাত্র-জনতার জীবন নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। যাদের হাতে সাধারণ মানুষের রক্ত তাদের বিচার আগে করতে হবে। তা না হলে শহীদের আত্মা শান্তি পাবে না।
প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রভুত্বের স্বভাব বাদ দিয়ে বন্ধু হিসেবে সকলের বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে সম্মান করতে হবে।
গোটা বিশ্ব হাসিনার ভোট বর্জন করলেও একমাত্র ভারত সাপোর্ট করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত সবচেয়ে বেশি রক্তাক্ত। ভারত বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করে থাকলে আমাদেরও অধিকার আছে, দিল্লি নিয়ে কথা বলার।
ভারতের কাছে নতজানু হয়ে থাকার দিন শেষ হয়ে আসছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আর কখনওই নতজানু হয়ে থাকবে না। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানও জানান রিজভী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, মাফিয়া সন্ত্রাসী টাকা পাচার এমন কিছু নেই যে শেখ হাসিনা করেনি। এখন সময় এসেছে এসব সংস্কার করার। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগুলো এখানে তো নির্বাচন হয় নেই। শেখ হাসিনার আমলে তো কোন নির্বাচনই হয় নেই। এগুলো হয়েছে স্থানীয় নেতা বা এমপি তাদেরকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নমিনেশন নিয়ে চেয়ারম্যান হয়েছে। এরা থাকলে দেশে তো সংস্কার হবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য বলি অবিলম্বে এদেরকে বাতিল করুন তা না হলে সংস্কারের কাজ এগিয়ে যেতে পারবেন না। এসপি, ডিসিরা যারা আছে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এই ছাত্র-জনতার যে রক্ত দিয়েছে এই রক্ত বৃথা হয়ে যাবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাইতুল মোকাররমের খতিব শেখ হাসিনার নতজানু লোক। তিনি গোপালগঞ্জ থেকে এসে বাইতুল মোকাররমে দখলের চেষ্টা করেছেন।’ এ সময় স্থানীয় বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিন ও মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম,মোস্তাফিজুর রহমান মনির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।