রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ করার দাবি সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই দাবি করেন সংগঠনের নেতারা।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ করার দাবি সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের

প্রথম নিউজ, অনলাইন: পতিত সরকারের নিয়োগকৃত পদলেহনকারী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ কারার দাবি জানিয়েছেন সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্টের নেতৃবৃন্দ। এর পাশাপাশি সংবিধানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের স্থলে জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নাম করার দাবি করেন সংগঠনের নেতারা।শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এই দাবি করেন সংগঠনের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুসার রেহমান। তিনি সংবাদ সম্মেলনে অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে ১৭ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে:
১.স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্রিটিশ সরকারের প্রণীত সকল আইন কানুন বিধি বিধানের আমূল সংস্কার করে স্বদেশ ও স্বাধীন মানুষের কল্যাণে সময়োপযোগী আইন সংস্কার কমিশন গঠন করে কল্যাণ রাষ্ট্রের সংবিধান সংশোধনসহ আইন বিধিমালা তৈরী করতে হবে। 
২.স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন দুদক, স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন, আইন কমিশন, স্বাধীন দেশে নাগরিক কল্যাণে পুলিশ কমিশন গঠনসহ ন্যায়পরায়ণ কমিশন গঠন করতে হবে। 
৩.পতিত সরকারের নিয়োগকৃত পদলেহনকারী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু অপসারণ করতে হবে। 
৪. পতিত সরকার কর্তৃক উচ্চ আদালতে নিয়োগকৃত দলীয় ও অনুগত সকল বিচারপতিদের অপসারণ করতে হবে। 
৫. ছাত্র-জনতাকে মনবতাবিরোধী গণহত্যা ও গণগুমের ন্যায় মানবতাবিরোধী অপরাধে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। 
৬.এক ব্যক্তি দু'বারের অধিক প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না মর্মে বিধিবদ্ধ আইন প্রণয়নসহ একই ব্যক্তি একই মেয়াদকালে সরকার প্রধান ও দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না। 
৭. স্বাধীন ও মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক বৈশিষ্ট্য বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের লক্ষ্যে এবং সম্প্রতি সংগঠিত ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনের প্রত্যাশিত আদর্শিক বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শিক্ষানীতি নিশ্চিত করতে হবে। 
৮.যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশ রাজা শাসকদের রাজ্য কিংবা রাষ্ট্র নয় সুতরাং সাংবিধানিকভাবে আমাদের রাষ্ট্রটির নাম 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের' স্থলে "জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ” নামকরণ করতে হবে। 
৯. হত্যাকাণ্ড যেমন অমানবিক ও গর্হিত অপরাধ সে কারণে হত্যাকরীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই যথার্থ ঠিক তেমনি  দুর্নীতি নামক দুষ্টুক্ষত অপরাধ দমনের লক্ষ্যে  মৃত্যুদণ্ড আইন প্রনয়ণ করতে হবে।
১০. দেশের নিন্ম আদালতসহ উচ্চ আদালতে সকল প্রকার আইনি কার্যক্রম ইংরেজী ভাষার পরির্বতে বাংলা চালু বাধ্যতামূলকসহ এর সকল সঠিক ব্যবহার বিধি চালুর লক্ষ্যে আইন গ্রন্থসমূহ বাংলায় রচনা করতে হবে। 
১১.ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় ভাতা বাতিলপূর্বক তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনাতে হবে।
১২. দেশের সকল নাগরিকদের জন্য একটি টেকসই পেনশন স্কীম পদ্ধতি চালুর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। 
১৩. উচ্চ আদালতসহ দেশের নিম্ন আদালতসমূহের বিচার বিভাগের কর্মচারী যথা বেঞ্চ অফিসার, সেরেস্তাদার, পেশাকারদের রেওয়াজী থোক (ঘুষ) আদান-প্রদানের ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের সকল আইনজীবী কর্তৃক ঘুষ রেওয়াজ প্রথা বন্ধে আন্তরিক হতে হবে। 
১৪. রাজধানী ঢাকার অসহনীয় যানজট নিরসনে ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে ব্যক্তিগত গাড়ী ব্যবহারে অধিক করারোপসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক আরামপ্রদ গণপরিবহন নিশ্চিত করতে হবে। 
১৫. সর্বস্তরের সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বার্ষিক ভিত্তিতে আয়-রোজগারসহ ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব বিবরণী জনসম্মুখে প্রকাশ বাধ্যতামূলক করতে হবে। 
১৬. বাংলাদেশে দলিল রেজিঃ সম্পাদনকারী সাবরেজিস্ট্রার অফিসের রেওয়াজী (১) ঘুষ ও অনৈতিক অর্থ লেনদেন বন্ধ করার লক্ষ্যে রেজিস্ট্রার/সাবরেজিস্ট্রার ও তাদের সহকর্মীদের গোয়েন্দা তদারকির মাধ্যমে তাদের নিত্যকার লক্ষ-কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 
১৭. অনৈতিক ব্যবসায়ী ও ঘুষ লেদদেনসহ অবৈধ অর্থ সংগ্রহকারী গোষ্ঠীটির বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনাসহ অর্থপাচারকারীদের অর্থবিত্ত ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দেশে ফেরত আনার কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্টের সভাপতি মেজর( অব:) মো. মফিজুল হক সরকার, ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, মেজর( অব:) হামিদুল ইসলাম বীর বিক্রম প্রমূখ।