নারায়ণগঞ্জে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
রোববার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ি মজলিস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও পাওনা টাকা না দেওয়ায় ফজলে রাব্বী (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। রোববার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ি মজলিস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফজলে রাব্বী স্থানীয় হাবিবপুর গ্রামের সানাউল্লাহ বেপারির বাড়ির ভাড়াটিয়া। তার বাবার নাম আক্কাস আলী।
লাশ সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের পিটুনিতে শাহ আলম নামের আরও একজন আহত হয়েছেন। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক তদন্ত মো. মহসিন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ি মজলিস এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ী অভয়ারণ্য ও বিভিন্ন অপরাধীর আখড়া হিসেবে পরিচিত। প্রতিনিয়ত ওই এলাকায় মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে।
রোববার রাত ১০টার দিকে শাহ আলম নামের পুলিশের এক সোর্স নিহত ফজলে রাব্বীকে ডেকে নিয়ে যায় বাড়ি মজলিস এলাকায়। পরে আগে থেকে সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী অন্তুর নেতৃত্বে মিন্টুসহ ৫-৬ জনের একটি দল ফজলে রাব্বী ও শাহ আলমের সঙ্গে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও ১০ হাজার টাকা লেনদেন কেন্দ্র করে তর্কবিতর্ক শুরু করে।
এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী অন্তুর ও মিন্টুসহ ৫/৬ জন মিলে ফজলে রাব্বীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। হামলাকারীরা এ সময় শাহ আলমকেও পিটিয়ে আহত করে।
ঘটনার পর এলাকাবাসী মুমূর্ষু অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফজলে রাব্বীকে মৃত ঘোষণা করেন। শাহ আলমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়।
নিহতের মা শাহানারা বেগম জানান, পুলিশের সোর্স শাহ আলম তার ছেলে রাব্বীকে বাড়ি মজলিশ গ্রামে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের জানানো হয়। হাসপাতালে এসে রাব্বীর লাশ দেখতে পাই। নিহতের মায়ের দাবি, পরিকল্পিতভাবে মাদক ব্যবসায়ীরা তার ছেলেকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
আহত পুলিশের সোর্স শাহ আলম বলেন, নিহত রাব্বী ও সে একে অপরের বন্ধু। রাতে দুজন মিলে বাড়ি মজলিস এলাকায় গেলে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত সন্ত্রাসী গিট্টু হৃদয়ের সহযোগী অন্তুর নেতৃত্বে মিন্টুসহ কয়েকজন তাদের কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর রাব্বী মারা যায়।
একটি সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অন্তু ও রাব্বীর মধ্যে কয়েক দিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত কয়েক বছর ধরে রাব্বী মাদক ব্যবসায়ী অন্তুর সঙ্গে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। মাদক বেচাকেনার সময় ১০ হাজার টাকা বকেয়া করে। পাওনা টাকা পরিশোধ করতে তালবাহানা করলে আফিয়া সিএমজি পাম্পে তাকে পেয়ে কুপিয়ে আহত করে।
সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।