নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ আওয়ামী লীগের
দেশ বিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
প্রথম নিউজ, ঢাকা : দেশ বিরোধী সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, কোনো ইস্যু সৃষ্টি করে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিহত করবে। দেশ বিরোধী সব ধরনের ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত মোকাবিলা করতে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থান নিয়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে। গতকাল বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। পরে ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সম্পাদকমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, সমাজকল্যাণ ও ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ অন্যরা।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অভিযোগ নিয়ে বিএনপি নেতাদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির নেতারা প্রধানমন্ত্রীর এই ঔদার্যকে প্রতিহিংসা বলতে দ্বিধাবোধ করছেন না। এদেশের রাজনীতিতে বিএনপির কৃতজ্ঞাবোধ প্রশ্নবিদ্ধ। তারা প্রতিহিংসা পরায়ণতার জন্ম দিয়েছে, জনগণ তা জানে।’ তিনি বলেন, ‘১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পেছনে জিয়াউর রহমান যদি না থাকতেন, তার পৃষ্ঠপোষকতা না থাকলে, তিনি মাস্টার মাইন্ড না হলে খুনিদের এত দুঃসাহস হতো না। বিএনপি ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যা করার জন্য গ্রেনেড হামলা পরিচালিত করেছিল। এতেই বোঝা যায় ষড়যন্ত্র কারা করে?’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেই ষড়যন্ত্রের পথ থেকে তারা কি এখনো সরে দাঁড়িয়েছে? আজকে বড় বড় কথা বলেন মির্জা ফখরুল সাহেব। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, কারও চিকিৎসার নামে দেশ ও জনগণকে জিম্মি করা যাবে না। কোনো ইস্যু ?সৃষ্টি করে শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিহত করবে।’
বিএনপির নেতাদের হুমকি-ধমকির ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের অগ্রগতি উন্নয়নকে যারা বাধাগ্রস্ত করবে আমরা তাদের সমুচিত জবাব দেবো। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এই এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে কেউ পিছিয়ে দিতে পারবে না। আমাদেরকে আজ এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত সুশৃঙ্খল আধুনিক এবং স্মার্ট একটা দলে পরিণত করবো। সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দলকে প্রস্তুত করে ঐক্যকে সংহত করবো এবং এটিই আমাদের শপথ।’ ‘ফখরুল সাহেব বলেছেন বেগম জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হচ্ছে। ফখরুল সাহেবকে বলতে চাই, দণ্ডপ্রাপ্ত-সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসাবে খালেদা জিয়া যে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঔদার্যের কারণে সম্ভব হয়েছে। আমরা বলতে চাই, বেগম জিয়ার পাশে থাকেন আপনারা। আওয়ামী লীগ বা সরকারের কেউ বেগম জিয়ার পাশে থাকেন না। তার ব্যক্তিগত পছন্দের চিকিৎসকরাই তাকে চিকিৎসা করাচ্ছেন।
তার চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন। তার আশেপাশের লোকেরা হচ্ছেন বিএনপির লোকেরা, তার পরিবারের লোকেরা, স্লো পয়জনিং যদি করে থাকে আপনারা পাশের লোকেরাই করতে পারেন। হুকুমের আসামি শেখ হাসিনা হবে না, সেটি হলে ফখরুল সাহেব আপনি হবেন। আপনি হবেন হুকুমের আসামি।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেগম জিয়াকে আপনারা স্লো পয়জনিং করাচ্ছেন কি তাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্য? আপনারা সে রকম কিছু করছেন বলেই কি আগেভাগেই উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে আজকে আওয়ামী লীগের ওপর, শেখ হাসিনার ওপর আপনারা দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মামলা আদালতে ঝুলিয়ে দিয়ে আপনারা সাতটা বছর নষ্ট করলেন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস আপনারা আদালতে উপস্থিত হলেন না। মামলাকে বিলম্বিত করলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে ব্যর্থ হলেন, খালেদা জিয়ার জন্য এখন এত মায়াকান্না কাঁদেন, কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করেন; সেই বেগম জিয়ার জন্য দেখবার মতো কার্যকর অর্থবহ একটি মিছিল রাজপথে করার দুঃসাহস আপনাদের ছিল না। এই সাহস আপনারা দেখাতে পারেননি। আজকে তার জন্য মায়াকান্না কাঁদছেন। লজ্জা করে না আপনাদের?’ শেখ হাসিনা মানবিক বলে তার সাজা স্থগিত করে বাসায় থেকে হাসপাতাল, বাসা থেকে হাসপাতালে থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলেও অবহিত করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘এখানে সরকারের কোনো দায় নেই। কোনোকিছু হলে দায় বিএনপিকেই নিতে হবে এবং মির্জা ফখরুলকে নিতে হবে। এটি হচ্ছে আমাদের বক্তব্য।’
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: